বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipality) অফিসের সামনে সকাল থেকেই অস্বাভাবিক ভিড়। হাতে পুরনো জন্ম শংসাপত্র নিয়ে নতুন করে কপির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কাতারে কাতারে মানুষ। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী বা এসআইআর প্রক্রিয়া ঘিরে তৈরি হওয়া আতঙ্কেই এমন চিত্র দেখা গিয়েছে বলে খবর।
প্রমাণ থাকলেও লাইনে নাগরিক
শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড অফিস এবং পুরসভার (Kolkata Municipality) বার্থ অ্যান্ড ডেথ সার্টিফিকেট বিভাগে সকাল থেকে মানুষের ঢল। অনেকে জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে বহু বছর আগের জন্ম সার্টিফিকেট রয়েছে, কিন্তু নতুন করে কপি চেয়ে অনেকে আবেদন করছেন, কারণ এসআইআর-এর প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্ব ও নথি যাচাইয়ের বিষয়টি কেন্দ্রীয় আলোচনায় এসেছে। এক নাগরিকের জানান, “পুরনো সার্টিফিকেট আছে, তবু ভয় লাগছে যদি কোথাও নথি অগ্রাহ্য হয়! তাই নতুন করে নিচ্ছি।”
পুরসভার (Kolkata Municipality) উদ্যোগে নতুন সফটওয়্যার
পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipality)। হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের পুরনো নথি থাকলে যাতে সহজেই জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্র পাওয়া যায়, সেজন্য নতুন সফটওয়্যার তৈরি করছে পুর প্রশাসন। স্বাস্থ্যভবনের সঙ্গে চলছে এই বিষয়ে আলোচনা। স্বাস্থ্যদপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, “যদি কোনও নাগরিক পুরসভায় আসেন এবং রেকর্ড রুম বা বরো অফিসে তাঁর জন্মের নথি মেলে, তবে বার্থ সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।”
চলতি আতঙ্কের মধ্যে অনেকে আবার পুরসভার (Kolkata Municipality) চ্যাটবটের সাহায্য নিয়েও আবেদন করছেন। তবে একসঙ্গে বহু ব্যবহারকারী লগ ইন করায় সফটওয়্যার ক্র্যাশ করছে বলে অভিযোগ। তাই নতুন সফটওয়্যার তৈরির কাজ ত্বরান্বিত করা হয়েছে।
ফিরহাদ হাকিমের আশ্বাস
শুক্রবারই মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “যাঁদের প্রামাণ্য নথি আছে, স্বাস্থ্যভবনের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের জন্ম শংসাপত্র দেওয়া হবে।” কিন্তু শনিবার দুপুর তিনটের পরও লাইনে নাগরিকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গিয়েছে। পুরসভার (Kolkata Municipality) এক বিভাগীয় আধিকারিক জানিয়েছেন, “প্রতিদিন ৩০০টি আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। নথি যাচাই করে পাঠানো হচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলেই সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।”
শুক্রবার বিকেলেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ পুরসভার আইটি বিভাগকে নির্দেশ দেন বিষয়টি কঠোরভাবে সামলাতে। নাগরিকদের দালালদের হাত থেকে রক্ষা করাই এখন প্রশাসনের বড় লক্ষ্য। শনিবার সকালে শীর্ষ পুরকর্তারা পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন, স্বাস্থ্য বিভাগের কম্পিউটারে স্ক্যান করে প্রতিটি নথির সত্যতা যাচাই চলছে। প্রতিটি সার্টিফিকেটে পুরসভার (Kolkata Municipality) বিশেষ জলছবি বা ওয়াটারমার্ক থাকে, যা জাল করা কার্যত অসম্ভব।

আরও পড়ুনঃ নন্দীগ্রাম থেকে ভবানীপুর, মমতা-অভিষেককে জোড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন শুভেন্দু অধিকারী
যাঁরা পুরনো জন্ম বা মৃত্যুর সার্টিফিকেট সঙ্গে এনেছেন, সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে যথাযথভাবে। প্রামাণ্য নথি থাকলে সমস্যা হবে না, এই আশ্বাসই দিচ্ছে পুরসভা (Kolkata Municipality)। তবে তাও আতঙ্কে সাধারণ মানুষ।













