বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতায় বেআইনি পার্কিং ফি আদায়ের অভিযোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। শহরের নির্ধারিত পার্কিং চার্জ কার্যত উপেক্ষা করে বহু জায়গায় দ্বিগুণ কিংবা তিন গুণ ফি আদায় করা হচ্ছে, আর সেই অর্থ নেওয়া হচ্ছে কোনও রসিদ ছাড়াই। এই অবস্থা শুধু সাধারণ মানুষকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে না, বরং কলকাতা পুরসভার রাজস্বেও বড় ধরণের ঘাটতি তৈরি করছে। এই ঘটনা বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।
সম্প্রতি ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে একাধিক নাগরিক এই সমস্যার কথা সরাসরি জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) কাছে। অভিযোগ ওঠে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাইকের জন্য ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত পার্কিং ফি দাবি করা হচ্ছে, অথচ কোনও বৈধ রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি রসিদ চাইতে গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের কাছ থেকে অভব্য আচরণের সম্মুখীন হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
পার্কিং ফি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে বোর্ড লাগানোর নির্দেশ দিলেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)
এই অভিযোগ শোনার পর মেয়র (Firhad Hakim) তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট পার্কিং বিভাগের আধিকারিককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি স্পষ্ট জানান, “পার্কিং মাফিয়াদের থাকতে দেব না।” পাশাপাশি শহরজুড়ে পার্কিং ফি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে বোর্ড লাগানোর নির্দেশ দেন এবং নাগরিকেরা যাতে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারেন তার জন্য একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপ তৈরির কথাও ঘোষণা করেন। তবে পুরসভার একাংশের আধিকারিকের মতে, আগে কলকাতা পুলিশের একটি অভিযোগ অ্যাপ চালু হলেও সেভাবে ফল পাওয়া যায়নি। তাদের মতে, সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে পার্কিং ফি কাঠামো পুনর্বিন্যাস করে এবং ডিজিটাল পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করলে।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, শহরের ব্যস্ততম এলাকা যেমন পার্কস্ট্রিট, গড়িয়াহাট, এসপ্ল্যানেড থেকে শুরু করে প্রায় সব অঞ্চলে অতিরিক্ত ফি আদায়ের ঘটনা ঘটছে। এমনকি কোথাও কোথাও গাড়ির জন্য ঘণ্টাপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত দাবি করা হচ্ছে, যা নির্ধারিত হারের তুলনায় অনেক বেশি। অনেকে অভিযোগ করেন, এই অবৈধ অর্থ আদায়ের পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবও রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ‘বৈধ নোটিশ ছাড়া নাম বাদ যাবেনা’, ৬৫ লক্ষ নাম বাদ বিতর্কে কমিশনের সাফাই, কি বলল সুপ্রিম কোর্ট?
উল্লেখ্য, যদি নতুন অ্যাপ ও সচেতনতামূলক বোর্ড কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে, তবুও মেয়র (Firhad Hakim) আশাবাদী যে সঠিক পদক্ষেপ নিলে বেআইনি ফি আদায় বন্ধ করা সম্ভব হবে। নাগরিকদেরও এই উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে শহরে সুশৃঙ্খল ও স্বচ্ছ পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়।