বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হিন্দুদের কাছে দীপাবলি আর হোলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। আর এই উৎসব প্রতি বছরই খুবই ধুমধামের সাথে পালিত হয়। কিন্তু পাকিস্তানে থাকা হাজার হাজার হিন্দু পরিবার এমনও আছে, যারা কোনদিনও এই উৎসব পালনের সুযোগ পায়নি। আর এই কথা দিল্লীর হিন্দু শরর্ণার্থী শিবিরে দুই বছর ধরে থাকা মোহিনী জানান।
মোহিনীর বয়স এখন ৩৬ বছর। জন্ম থেকে এখনো উনি পাকিস্তানে কখনো হোলি আর দীপাবলি দেখেননি। পরিবারের মানুষের থেকে সে জানতে পারত যে, এই দুই উৎসবে ভারতে কি কি হয়? কিন্তু আতঙ্কে আর পাকিস্তানে থাকা হিন্দুদের উপর অত্যাচারের কারণে সে কোনদিনও এই উৎসব পালন করতে পারেনি। পাকিস্তানের হিন্দুদের উপর এতটাই অত্যাচার হয় যে, সেখানকার হিন্দুরা ঘরে লুকিয়ে লুকিয়ে ভগবানের পূজা করে।
মোহিনী জানায়, ২০১৭ সালে সে প্রথবার ভারতে এসেছিল। তাঁর সাথে তাঁর দুই সন্তান আর তাঁর স্বামী মহেশও ছিল। ওরা তীর্থের নামে ভারতে আসে, আর সেখান থেকে সোজা দিল্লীর শরর্ণার্থী শিবিরে গিয়ে ঠাই নেয়। শিবিরে ২০১১ সাল থেকে মোহিনীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরা থাকে। মোহিনী ২০১৮ সালে প্রথমবার দীপাবলি আর হোলি পালন করে।
মোহিনী জানায় তাঁকে ছোট বেলা থেকেই ঘরে বন্ধ করে রাখা হত। মাতা পিতা তাঁকে স্কুলেই পাঠাত না, আর না তাঁকে ঘরের বাইরে বেরাতে দিত। তাঁদের মধ্যে সবসময় একটাই ভয় বিরাজ করত যে, তাঁদের মেয়েকে কেউ অপহরণ করে নিয়ে যাবে। ১৮ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে মহেশের সাথে হয়।
বিয়ের পরেও তাঁর পরিবার আতঙ্কে বাস করত। মোহিনী যখন ঘর থেকে বাইরে কোথাও বেরাত, তখন পুরো শরীর ঢেকে বেরাত। আর বাইরে বেরিয়ে নমস্কারের জায়গায় তাঁকে দুয়া স্যালাম বলতে হত। অনেক সময় প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলার সময়েও সে ভয় পেত যে, তাঁর মুখ থেকে হিন্দুদের নিয়ে কথা বেরিয়ে গেলে কোন বিপদ না চলে আসে। মোহিনী অনেক বছর সিন্ধ প্রদেশে একটি গ্রামে নিজের পরিচয় লুকিয়ে বাস করত। মোহিনী জানায় সে আর কোনদিনও পাকিস্তান যেতে চায়না। পরিবারের সাথে সে ভারতেই থাকতে চায়।