বাংলা হান্ট ডেস্ক: চলতি বছর রথযাত্রা (Rath Yatra) পালিত হবে আগামী ২০ জুন। তবে, তার আগে প্রতি বছরই মহাসমারোহে পালিত হয় শ্রীজগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা (Snan Yatra)। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে জানা যায় যে, জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই স্নানযাত্রা পালিত হয়। এমতাবস্থায়, এই বছর ৪ জুন বা ২০ জ্যৈষ্ঠ অর্থাৎ আজ পালিত হচ্ছে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার স্নানযাত্রা।
পাশাপাশি, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই বিশেষ দিনটিকে জগন্নাথদেবের জন্মতিথি হিসেবেও মনে করা হয়। এমতাবস্থায়, স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে পুরীতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে কলসি দিয়ে জল ঢেলে স্নান করানোর রীতি রয়েছে। আর এই দৃশ্য পরিলক্ষিত করতেই এই বিশেষ দিনটিতে সেখানে ভিড় জমান বহু মানুষ। বিশ্বাস করা হয় যে, জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা চাক্ষুস করলে সব পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
প্রথা অনুযায়ী, এই স্নানযাত্রার আগের দিন জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রা, সুদর্শন চক্র ও মদনমোহনের বিগ্রহ একটি বিরাট শোভাযাত্রার মাধ্যমে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে স্নানবেদীতে এনে রাখা হয়। এরপর স্নানযাত্রার দিন মন্দিরের উত্তর দিকের কূপ থেকে জল এনে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে সেই জলকে শুদ্ধিকরণের মাধ্যমে ১০৮ টি কলসির জলে বিগ্রহগুলিকে স্নান করানো হয়।
এদিকে, মনে করা হয় যে এই স্নানের পরে জ্বর আসে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার। যে কারণে তাঁরা রাজবৈদ্যের কাছে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি সংরক্ষিত কক্ষে থাকেন। যেটি পরিচিত “অনসর” নামে। মোট ১৪ দিনের জন্য একটি পৃথক ঘরে থাকেন স্বয়ং দেবতা। এই সময়টাতে ভক্তরা দেবতার দর্শন পান না।
তবে, এই নির্দিষ্ট দিনগুলিতে মূল মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার দর্শনের ক্ষেত্রে বিগ্রহের পরিবর্তে তিনটি পটচিত্র রাখা হয়। এদিকে, ভক্তদের বিশ্বাস অনুযায়ী, এই সময়টাতে জগন্নাথ “অলরনাথ” রূপে ব্রহ্মগিরিতে অলরনাথ মন্দিরে অবস্থান করেন। এমতাবস্থায়, জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে উঠে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা রাজবেশে সজ্জিত হয়ে রথযাত্রার মাধ্যমে মাসির বাড়িতে উপস্থিত হন।
স্নানযাত্রায় মেনে চলুন এই নিয়মগুলি: এই বিশেষ দিনটিতে সকালবেলা নতুন বস্ত্র পরে গঙ্গায় স্নান সারতে হয়। তারপর মন্দিরে বা বাড়িতে থাকা জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহের পুজো করার নিয়ম রয়েছে। তবে পুজো সম্পন্ন করার আগে তাঁদের অবশ্যই স্নান করানোর রীতিও রয়েছে।
স্নানযাত্রার রীতি: মূলত, গঙ্গাজল ও কাঁচা দুধের সঙ্গে চন্দন, কর্পূর এবং আতর মিশিয়ে ভক্তি ভরে স্নান করাতে হবে তাঁদের। স্নানের পরে জগন্নাথদেবের চরণে দিন মোট ১০৮ টি তুলসী পাতা। পাশাপাশি, জগন্নাথদেব, সুভদ্রা ও বলরাম তিনজনের মূর্তির সামনেই গোলাপ ফুল দিয়ে সাজিয়ে উৎসর্গ করুন ৫ রকমের ফল। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এদিন অন্তত একজন ব্রাহ্মণকে ভোজন করানো অত্যন্ত শুভ বলে বিবেচিত হয়। এই নিয়মগুলি সঠিকভাবে মানলে সারাবছর আপনি ব্যবসায় ও চাকরির ক্ষেত্রে লাভবান হবেন। পাশাপাশি, পারিবারিক জীবনেও বজায় থাকবে সুখ এবং শান্তি।