বাংলাহান্ট ডেস্ক : টেট, এসএলএসটির পর এবার দুর্নীতির ছায়া আইসিডিএসে। এই প্রকল্পে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসাবে চাকরি দেওয়ার নামে বেশ বড় রকমের প্রতারণার অভিযোগ উঠে এল এবার। অভিযোগের তীর মালদহ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মালতিপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সির দিকে। জানা যাচ্ছে গাজোলের একাধিক মহিলা আবদুর রহিম বক্সির নামে মালদহের জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। রীতিমতো চাপানউতোর শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। বিতর্কের আঁচ পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়তেও।
জানা যাচ্ছে, গাজোলের উত্তর আলিনগরের বাসিন্দা ফারিদা খাতুন-সহ আরও জনা পাঁচেক মহিলার সই করা একটি অভিযোগপত্র গত মঙ্গলবারই মালদহের জেলাশাসকের দপ্তরে জমা পড়ে। সেই অভিযোগপত্রেই নাকি সরাসরি আবদুর রহিম বক্সির বিরুদ্ধে আইসিডিএস প্রকল্পে চাকরি দেওয়ার নামে বেশ মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ওই মহিলারা অভিযোগ করেন, আবদুর রহিম বক্সি সেই সময় আরএসপি দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জানা যাচ্ছে, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর চাকরি দেওয়ার কথা বলে তিনি মোটা টাকা হাতিয়ে নেন। পরে যে নিয়োগপত্রগুলি পাঠানো হয়, সেগুলি সবই ছিল ভুয়ো। তাই কাজে যোগ দেওয়া আর তাঁদের হয়ে ওঠেনি। ওই দপ্তরের আধিকারিকরা তাঁদের নিয়োগপত্রগুলিকে পুরোপুরিই নকল বলে জানিয়ে দেন। এরপরই তাঁদের টাকা ফেরত চেয়ে রহিম বক্সির দ্বারস্থ হন মহিলারা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি পয়সাও তাঁরা ফেরত পাননি বলে অভিযোগ করেন।
এদিন গাজোলের উত্তর আলিনগরের বাসিন্দা ফারিদা খাতুন বলেন, ‘তিন বছর আগে আমরা চাকরির জন্য আড়াই লক্ষ টাকা করে দিয়েছি। তারপর আরএসপি ছেড়ে রহিম বক্সি তৃণমূলে যোগ দেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু দফতরের আধিকারিকরা জানিয়ে দেন, সেগুলি নকল। এরপর আমরা টাকা ফেরত চেয়েছিলাম। রহিম বক্সি রাজিও হয়। তিনি এমনও আশা দেন, এই সরকারের আমলে চাকরি করে দেবেন আমাদের। এভাবে আজ-কাল করে ঘুরিয়ে যাচ্ছে আমাদের। জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ করে এসেছি। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই।’ এদিন সকাল থেকেই সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় সেই অভিযোগপত্রের ফটোকপি।
আবদুর রহিম বক্সি যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগ। ওই মহিলাদের আমি চিনিই না। ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানো করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়াও বিষয়টি নিয়ে তেমন কিছু জানাতে চাননি। জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত খবর এই ধরনের একটি অভিযোগ সত্যিই এসেছে। পুরো বিষয় খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। নতুন করে এই দুর্নীতির ঘটনায় চরম অসস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। যদিও তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় স্তর থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।