বাংলা হান্ট ডেস্ক: NRC লাগু হওয়ার পর থেকেই মাথায় হাত পড়েছে বহু পরিবারের। অথৈ জলে ডুবেছেন অনেকেই। বহু মানুষের কাছে একেবারেই এই বিষয় স্পষ্ট নয় যে তাঁদের নাম অসমের নাগরিকপঞ্জিতে নেই। NRC-ছুট হিসেবে দেশহীনের তকমা! জুটছে। তাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা দেশের সেবা করেও এখন দেশহীন। নির্ঘুম এবং চিন্তায় বহু বাঙালি ও নেপালি পরিবারের সময় কাটছে। এবার এই NRC তালিকায় যুক্ত হল স্বাধীনতা সংগ্রামী যোগেশ দেবের পরিবারের নাম।
অসমের শ্রীহট্টে, যা এখন বাংলাদেশের সিলেট, সেখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামী যোগেশ দেবের জন্মভূমি। পড়াশোনার তাগিদেই ভারতের অসমে আসেন তিনি। নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়েছে তাঁর পরিবারের নাম। ১৯৪২ সালে গান্ধীজির ডাকা ব্রিটিশ ভারত ছাড় আন্দোলনে সামিল হন। শুধু তাই নয় অসমে ভাষা আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। এদিকে ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের নাম ছিল। যোগেশ দেবকে স্বাধীনতা সংগ্রামীর শংসাপত্র দিয়েছিল ভারত সরকার।
তাঁর তিন ছেলে জগদীশ, দিলীপ এবং জ্যোতির্ময়ের মধ্যে বড় ছেলে প্রয়াত। তবে ৩১ অগস্ট প্রকাশিত হওয়া NRC তালিকায় জায়গা পায়নি যোগেশ দেবের পরিবারের নাম। উধাও জ্য়োতির্ময় ও দিলীপের পরিবারের নাম। স্বাধীনতা সংগ্রামীর বংশধরই আজ ‘স্বদেশে পরাধীন’।
ইতিমধ্যেই অসমে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা সমালোচনার তুঙ্গে গেরুয়া শিবির। খসড়ায় নাম ছিল না প্রায় ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষের। যদিও চূড়ান্ত তালিকাতে সে পরিমাণ কমেছে, বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১৯ লক্ষে। কিন্তু এই এনআরসি তালিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস-বিজেপি দুপক্ষই। তারা জানিয়েছেন যে বৈধ নাগরিকরাই বাদ পড়ে গিয়েছে এই নাগরিকপঞ্জি থেকে। আর তার জায়গায় স্থান পেয়েছে বিদেশীরা।
বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মাই নিজেই প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁসা দক্ষিণ সালমারা, ধুবড়ির মতো এলাকায় অনুপ্রবেশকারী’দের বাতিলের হার সবথেকে কম। উল্টে যে সমস্ত এলাকায় প্রকৃত অসমিয়ারা বসবাস করেন, সবচেয়ে বেশি বাদ পরার সংখ্যা সেখানে। এই ঘটনা কিভাবে সম্ভব? এনআরসি নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যাথা নেই।’