বাংলা হান্ট ডেস্ক: সোমবার নেপালের (Nepal) রাজধানী কাঠমান্ডু রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে। মূলত, দেশের তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে। কিছু বিক্ষোভকারী সংসদ প্রাঙ্গণে প্রবেশও করে। সেই সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের সরিয়ে দিতে শূন্যে গুলি চালাতে হয়। এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গুলিবিদ্ধ হয়ে ৯ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। সিভিল হাসপাতালের তরফে মোহন চন্দ্র রেগমি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়াও, প্রায় ৮০ জন আহত হয়েছেন। যাঁদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নেপালে (Nepal) বিক্ষোভ তরুণ প্রজন্মের:
এদিকে, এহেন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই কাঠমান্ডু (Nepal) জেলা প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর কারফিউ জারি করেছে। বিক্ষোভকারীরা নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশের পর প্রথমে বানেশ্বরের কিছু অংশে কারফিউ জারি করা হয়েছিল। কিন্তু, পরবর্তীতে একাধিক এলাকায় বাস্তবায়িত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতির বাসভবন, শীতল নিবাস এলাকা, মহারাজগঞ্জ, লৈনচৌরে উপরাষ্ট্রপতির বাসভবন, সিং দরবার এলাকা, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এবং সংলগ্ন এলাকা।
#WATCH | Nepal | Protestors vandalise the Parliament gate as the protest turned violent in Kathmandu, as people staged a massive protest against the ban on Facebook, Instagram, WhatsApp and other social media sites, leading to clashes between police and protesters pic.twitter.com/dkh9Mg7BGc
— ANI (@ANI) September 8, 2025
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আরও বড়সড় ঝামেলা রোধ এবং সংবেদনশীল সরকারি স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কারফিউ জারির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রধান জেলা আধিকারিক ছাবিলাল রিজাল কর্তৃক আরোপিত কারফিউ দুপুর ১২ টা বেজে ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। কারফিউ জারি করা নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে চলাচল, জমায়েত, বিক্ষোভ বা অবরোধ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন: “এই জয় আরও স্পেশাল, কারণ…”, হকি এশিয়া কাপে ভারতের জয়ে গর্বিত মোদী, জানালেন অভিনন্দন
তরুণরা কী নিয়ে ক্ষুব্ধ: বিক্ষোভকারী তরুণদের লক্ষ্য হল সরকার কর্তৃক আরোপিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যানের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা। এছাড়াও, তারা দেশে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতির অবসানের দাবি জানাচ্ছে। জানিয়ে রাখি যে, ইতিমধ্যেই নেপাল (Nepal) সরকার ফেসবুক সহ ইউটিউব এবং এক্সের মতো ২৬ টি আন রেজিস্টার্ড প্ল্যাটফর্ম ব্যান করেছে। যার ফলে ব্যবহারকারীরা এই সাইটগুলিতে অ্যাক্সেস করতে পারছেন না। সরকারের এই পদক্ষেপে সাধারণ জনগণ হতবাক এবং ক্ষুব্ধ। নেপালে ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মের লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী আছেন। যাঁরা বিনোদন থেকে শুরু করে সংবাদ এবং ব্যবসার জন্য সেগুলির ওপর নির্ভর করেন।
Gen Z-এর প্রতিবাদ: মূলত, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, Gen Z বিক্ষোভকারীরা জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে তাঁদের প্রতিবাদ শুরু করেন এবং তারপর সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। ২৪ বছর বয়সী ছাত্র যুজন রাজভাণ্ডারি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়। আমরা নেপালে চলমান প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আমাদের আওয়াজ তুলছি।” এদিকে, ২০ বছর বয়সী ছাত্রী ইক্ষমা তুমরোক জানিয়েছেন যে, তিনি সরকারের কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। তাঁর মতে, “আমরা পরিবর্তন চাই। পূর্ববর্তী প্রজন্ম এটা সহ্য করেছে, কিন্তু আমাদের প্রজন্মের সঙ্গেই এর সমাপ্তি ঘটতে হবে।”