ফুটবল পাগল জার্মানিকে ক্রিকেটে বিশ্বজয়ী করতে চান দেশ থেকে বিতাড়িত আফগানরা

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: জার্মানির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টিম? ফুটবল-পাগল এই দেশে ক্রিকেট হয় নাকি? আশ্চর্য লাগলেও এমনটাই সত্যি। একশো বছর আগে জার্মানিতে ক্রিকেটের প্রচলন থাকলেও ততটা জনপ্রিয় পায়নি। তবে এখন জার্মানিতে দ্রুত প্রসার হচ্ছে ক্রিকেটের। এবার তারা আইসিসির ওয়ার্ল্ড লিগের ডিভিশন ফাইভে খেলেছে।জার্মানির ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান ম্যান্টল একটা স্বপ্ন দেখছেন। অদূর ভবিষ্যতে আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট খেলবে জার্মানি।ম্যান্টলকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে মূলত জার্মানিতে শরণার্থী হয়ে আসা পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কিছু যুবক। এরাই জার্মানিতে ক্রিকেটের দ্রুত প্রসার ঘটাচ্ছে।

বিশ্ব র্যা ঙ্কিংয়ে জার্মানির স্থান এখন ৩২। উন্নয়নের হার যে-কোনো দেশের থেকেই বেশি। ২০১২ নাগাদ মাত্র ৭০টি ক্লাব ছিল জার্মানিতে। এখন সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ২৫০-এ।জার্মানিতে ক্রিকেটের প্রসার কতটা দ্রুত হচ্ছে, সেটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। জার্মানির ক্রিকেট বোর্ডের হিসাব বলছে, ২০১২ সালে দেশটিতে ৭০টি ক্রিকেট ক্লাব ছিল। আর ক্লাবগুলোয় খেলত ১ হাজারের মতো ক্রিকেটার। আর বর্তমানে ২২০টি ক্লাবে রয়েছে ৫ হাজার ক্রিকেটার।

ম্যান্টল বলেছেন, এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসা মানুষের জন্য জার্মান সরকার কাজ আর শিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারছে না। তাদের হাতে অফুরন্ত সময়। আর সেই সময়টা তারা ব্যয় করছে ক্রিকেটের পেছনে। ম্যান্টল বলে চলেন, ‘এখানে অভিবাসীদের প্রায় ৯৫ শতাংশ এশীয়। এদের বেশির ভাগই শরণার্থী। ইউরোপের অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি ক্রিকেটার পাচ্ছি আমরা।’ম্যান্টলেরই দেওয়া তথ্য, শত শত আফগান তরুণ এসেছে। যাদের বেশির ভাগই ফাস্ট বোলার। কেউ কেউ আবার স্পিনারও। এরা বছর দুয়েকের মধ্যেই জার্মানির হয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। জার্মানিতে বেড়ে উঠছেন আফগান এই অভিবাসীরা। ভোগ করছেন সুযোগ-সুবিধা। তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস জার্মানির হয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলে বিনিময়ে কিছু ফিরিয়ে দিতে পারবেন। সানি নামের এক ক্রিকেটারও সেই স্বপ্নই দেখছেন, ‘জার্মানির হয়ে আমি যদি কিছু করতে পারি সেটা ক্রিকেট খেলা। ফুটবলে জার্মানি সেরা। একদিন ক্রিকেটেও সেরা হবে।’

এমন হাজার শরণার্থীদের স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব নিয়েছে জার্মানি। যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে ফিরিয়ে এনে, দিয়েছে সুন্দর জীবন। নতুন দেশে এই যুদ্ধকে ভুলতে জার্সি গায়ে জড়িয়ে নিয়েছেন তাঁরা। কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নতুন দেশকে। ইউরোপিয়ান ক্রিকেট লিগে ইতিমধ্যেই ভালোরকম জায়গা করে নিয়েছে জার্মানি। এখন পাখির চোখ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম সারির টুর্নামেন্ট। সেই লক্ষ্যেই জান লড়িয়ে দিচ্ছেন সানির মতো শরণার্থীরা। আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে জার্মানিকে দেখতে পাওয়া এখন হয়তো সময়েরই অপেক্ষা। শরণার্থী নিয়ে একবার জার্মানির চ্যান্সেলর আঞ্জেলা মর্কেল বলেছিলেন, এই সমস্যাটা জার্মানিকে বদলে দিতে পারে। কিন্তু সেই বদল যে এমন ইতিবাচক হবে, সেটা হয়তো তিনি ভাবতেও পারেননি!

X