বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতে পাসপোর্ট (Passport) পেতে হলে আগে আবেদন করতে হবে। তারপর আপনার আবেদনটি একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাবে। তারপর যাচাইয়ের জন্য আপনার বাড়িতে একজন বা দু’জন পুলিশকর্মী যাবেন। তারপরে আপনি হাতে পাবেন পাসপোর্ট। সাধারণত এটিই হয়ে থাকে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) গাজিয়াবাদের এক ব্যক্তি যা করলেন তা এক কথায় অভাবনীয়।
নিজের স্ত্রীয়ের পাসপোর্ট ক্লিয়ার করানোর জন্য গাজিয়াবাদের (Ghaziabad) রাজা বাবু শাহ পুলিশ ওয়েবসাইট হ্যাক (Hack) করেন! ২৭ বছর বয়সি এই সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আপাতত মুম্বই সাইবার পুলিশের (Mumbai Cyber Police) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওয়েবসাইট হ্যাক করার পাশাপাশি রাজা বাবু শাহ তিন জন আবেদনকারীর এনকোয়্যারি রিপোর্ট মুছে দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের স্ত্রীয়ের একটি চাকরি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল। তার জন্য তাঁর পাসপোর্টের প্রয়োজন ছিল। এদিকে তাঁর স্বামী বাবু শাহ তাঁর মন জিততে চেয়েছিলেন। তাই তিনি পুলিশের ওয়েবসাইট হ্যাক করে ফেলেন। সাইবার পুলিশ সূত্রে খবর, সন্দেহ এড়াতে ওয়েবসাইট থেকে দু’টির বেশি এনকোয়্যারি মুছে ফেলেছিলেন অভিযুক্ত।
তারা আরও জানিয়েছে, বাবু শাহের জমা দেওয়া নথিপত্রে কোনও সমস্যাই ছিল না। কিন্তু FIR-এর পর তাঁর পাসপোর্ট আটকে দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে জেল হেফাজতে রয়েছেন অভিযুক্ত বাবু শাহ। এই ঘটনা সহজে সামনে আসেনি। গত বছরের শুরুর দিকে মুম্বইয়ের আজাদ ময়দান থানায় এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় অভিযোগ।
তাঁর বিরুদ্ধে নিরাপত্তা, পরিচয় চুরি, আইপিসির বিভিন্ন ধারা এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের অধীনে কম্পিউটার সম্পদের জালিয়াতির অভিযোগ ছিল। এছাড়াও পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য রেখে দেওয়া তিনটি পাসপোর্টের সমস্ত তথ্য মুছে ফেলেন অভিযুক্ত। এতেই আরও সন্দেহ বাড়ে। পাসপোর্টগুলি অ্যানটপ হিল, চেম্বুর এবং তিলক নগরের তিন বাসিন্দার ছিল।
তদন্তে উঠে আসে, ওই আইপি অ্যাড্রেসগুলি অভিযুক্তের দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছিল। এরপর এই মামলার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় সাউথ জোন সাইবার থানার হাতে। ডিসিপি বালসিংহ রাজপুত এবং এসিপি রামচন্দ্র লোতিলকরের যৌথ দল মিলে গ্রেফতার করে রাজা বাবু শাহকে। তিনি গাজিয়াবাদের বাসিন্দা।
তিনি একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। কিন্ত তাঁর স্ত্রী মুম্বইতে কর্মরতা ছিলেন। বাবু শাহ প্রথমে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তারপর তিনটি পাসপোর্টের সমস্ত তথ্য মুছে ফেলেন। এর মধ্যে তাঁর স্ত্রীয়ের পাসপোর্টও ছিল। পুলিশের ওয়েবসাইট বেআইনি ভাবে হ্যাক করে এই কাজ করেছিলেন তিনি। যদিও ঠিক কী ভাবে তিনি ওয়েবসাইট হ্যাক করলেন তা জানায়নি পুলিশ।