পাকিস্তানে হবে সংস্কৃত শিক্ষা! পড়ানো হবে গীতা-মহাভারতও, বড় পদক্ষেপের পথে এই বিশ্ববিদ্যালয়

Updated on:

Updated on:

Gita and Mahabharata will be taught in Pakistan.
Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: এবার পাকিস্তানেও (Pakistan) সংস্কৃত ভাষা শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লাহোরের একটি নামী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান লাহোর ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস (LUMS) তাদের পাঠক্রমে সংস্কৃত ভাষা অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। শুধু ভাষা শিক্ষাই নয়, আগামী দিনে মহাভারত ও ভগবদ্‌গীতার মতো প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থও পড়ানোর ভাবনাচিন্তা চলছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের বক্তব্য, সংস্কৃত কোনও একটি দেশের একচেটিয়া ঐতিহ্য নয়, বরং উপমহাদেশের সামগ্রিক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের অংশ।

পাকিস্তানের (Pakistan) বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখানো হবে সংস্কৃত ভাষা:

১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান (Pakistan) আলাদা হলেও, ইতিহাস ও সংস্কৃতির বহু স্তরে দুই দেশের মিল আজও স্পষ্ট। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে সীমান্তরেখা টানা হলেও ভাষা, সাহিত্য ও সামাজিক পরম্পরার ক্ষেত্রে সেই বিভাজন সম্পূর্ণভাবে কার্যকর হয়নি। এই প্রেক্ষিতেই সংস্কৃত শিক্ষার উদ্যোগকে উপমহাদেশীয় ঐতিহ্যের পুনরাবিষ্কার হিসেবে দেখছেন অনেকে। LUMS-এর অধ্যাপকদের একাংশের মতে, সংস্কৃত বুঝতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস, দর্শন ও ভাষাতত্ত্ব আরও গভীরভাবে অনুধাবন করা সম্ভব।

আরও পড়ুন:জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ হন স্বামী! কঠোর পরিশ্রম করে চাষাবাদেই সাফল্যের নয়া নজির গড়লেন আসিয়া

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভারতের সবচেয়ে প্রচলিত ভাষা হিন্দি এবং পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু—এই দুই ভাষারই শিকড় সংস্কৃত থেকে উদ্ভূত শৌরসেনী প্রাকৃত ভাষায় নিহিত। ব্যাকরণ, বাক্যগঠন এবং বহু মূল শব্দের ক্ষেত্রে হিন্দি ও উর্দুর মধ্যে যেমন মিল রয়েছে, তেমনই উর্দুর সঙ্গেও সংস্কৃতের একটি ঐতিহাসিক যোগসূত্র বিদ্যমান। সেই কারণেই সংস্কৃত শেখানো হলে উর্দু ভাষার বিকাশ এবং তার শাস্ত্রীয় দিকগুলিও নতুন করে বোঝা যাবে বলে মত শিক্ষাবিদদের।

LUMS সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে সংস্কৃত পাঠ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। পরবর্তীকালে আগ্রহ বাড়লে ভারতীয় দর্শন, মহাকাব্য ও প্রাচীন সাহিত্য নিয়ে বিশেষ কোর্স চালু করা হতে পারে। মহাভারত ও গীতার পাঠ শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, নৈতিকতা, রাজনীতি, সমাজব্যবস্থা এবং মানবিক মূল্যবোধের আলোকে পড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা। আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা ও তুলনামূলক সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রেও এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।

Gita and Mahabharata will be taught in Pakistan.

 

আরও পড়ুন:ডিসেম্বর নয়, বাড়বে সময়সীমা? SSC নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, শিক্ষকদের জন্য বড় পদক্ষেপ

এই ঘোষণার পর পাকিস্তানের (Pakistan) শিক্ষামহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ একে সাহসী ও প্রগতিশীল পদক্ষেপ বলে স্বাগত জানিয়েছেন, আবার কারও মতে বিষয়টি সংবেদনশীল। তবুও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ভাষা ও জ্ঞান কখনও সীমান্ত মানে না। সংস্কৃত শেখানোর মাধ্যমে উপমহাদেশের যৌথ অতীতকে বোঝার একটি জানালা খুলবে, যা ভবিষ্যতে সাংস্কৃতিক সংলাপ ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিনিময়কে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে।