বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাংলার পড়শি রাজ্যেই রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ সোনার ভাণ্ডার (Gold Reserve)। বিহারকে এখন ‘সোনার বিহার’ বললেও ভুল হবে না। ভূতত্ত্ব সর্বেক্ষণ দপ্তরের (জিএসআই) সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ এক তথ্য – রাজ্যের জামুই জেলায় মিলেছে দেশের সবচেয়ে বড় সোনার ভাণ্ডার। প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, সেখানে প্রায় ২২২.৮৮ মিলিয়ন টন সোনাযুক্ত শিলার সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে প্রকৃত ধাতব সোনার পরিমাণ প্রায় ৩৭.৬ টন। এই পরিমাণ ভারতের মোট সোনার মজুতের প্রায় ৪৪ শতাংশ, যা দেশের সোনার মানচিত্রই বদলে দিতে পারে।
পড়শি রাজ্যেই খোঁজ মিলল দেশের সর্ববৃহৎ সোনার ভাণ্ডারের (Gold Reserve)
এক সময় কর্ণাটকের হুট্টি ও কোলার গোল্ড ফিল্ডস দেশের ৯৯ শতাংশ সোনার যোগান দিত। কিন্তু জামুইয়ের এই আবিষ্কার সেই হিসাব ওলটপালট করে দিয়েছে। এখন বিহারই হয়ে উঠেছে দেশের শীর্ষ সোনাভাণ্ডার বাংলার পড়শী রাজ্যেই রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ সোনার ভাণ্ডার (Gold Reserve) যুক্ত রাজ্য, যার পরে রয়েছে রাজস্থান (২৫ শতাংশ) এবং কর্ণাটক (২১ শতাংশ)। পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশে ৩ শতাংশ করে এবং ঝাড়খণ্ডে ২ শতাংশ সোনার মজুত রয়েছে।
আরও পড়ুন:প্রকৃতি-সংস্কৃতি-স্বদেশী! “মন কি বাত”-এর ১২৭ তম পর্বে ঐক্যের বার্তা মোদীর, কী জানালেন প্রধানমন্ত্রী?
রাজ্যের খনি ও ভূতত্ত্ব দপ্তর এই বিশাল সোনার ভাণ্ডার (Gold Reserve) উত্তোলনের জন্য ইতিমধ্যেই কার্যক্রম শুরু করেছে। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব ও খনি কমিশনার হরজোত কৌর বামরাহ জানিয়েছেন, শীঘ্রই জিএসআই এবং ন্যাশনাল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এনএমডিসি)-এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। প্রাথমিকভাবে জামুই জেলার করমাটিয়া, ঝাঝা ও সোনো অঞ্চলে জি-থ্রি স্তরের অনুসন্ধান শুরু হবে। কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় আরও উন্নত জি-টু স্তরের জরিপও চালানো হতে পারে।

আরও পড়ুন:বঙ্গে শীতের দেখা নেই! এরই মধ্যে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গ নিয়ে ‘খারাপ খবর’ দিল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর
উল্লেখ্য, এই আবিষ্কারের কাজ ২০২২ সালেই হলেও এরপরও তা নিয়ে নীরবতা কাটেনি। এখনও পর্যন্ত পুরো প্রকল্পটি পরিকল্পনা ও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় খনি মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী গত বছর সংসদে এক লিখিত জবাবেও এই নিয়ে তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ভারতের মোট ৫০১.৮৩ মিলিয়ন টন প্রাথমিক সোনার আকরিক (Gold Reserve) মজুতের মধ্যে অর্ধেকেরই অবস্থান বিহারে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, জামুইয়ের এই সোনার খনি (Gold Reserve) বিহারের অর্থনীতির জন্য একটি ‘গেম চেঞ্জার’ হয়ে উঠতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে দারিদ্র্য ও পরিযায়ী শ্রমিক সমস্যায় জর্জরিত এই রাজ্যে খনিজ সম্পদের সঠিক ব্যবহার শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। জিএসআই-র ২০২২ সালের জরিপে দক্ষিণ বিহারের পাহাড়ি অঞ্চলে পাওয়া এই সোনার সন্ধান রাজ্যের ভাগ্যবদলের এক সোনালি সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।













