গোপাল ভাঁড়, কৃষ্ণনগরের এই বিদূষকের নাম জানেন না এমন বাঙালি বোধহয় নেই৷ গোপাল মানেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক মিষ্টি গোলগাল সদাহাস্যজ্বল মানুষের ছবি। কিন্তু এমন মানুষকে কেম ফাঁসির আদেশ দেন নবাব সিরাজ? আসুন জেনে নি আসল কারন
গোপাল চন্দ্র প্রামাণিক, আমাদের সবার প্রিয় গোপাল ভাঁড়। কৃষ্ণচন্দ্রের এই সভাসদ সাক্ষী ছিলেন বাংলার নবাবকে সরানোর ঘৃণ্যতম ষড়যন্ত্রে। কিন্তু স্বাধীনচেতা গোপাল কখনোই এই ষড়যন্ত্রে সায় দিতে পারেন নি। কৃষ্ণচন্দ্র যখন মিরজাফর, ঘসেটি বেগম সহ অন্যান্যদের সাথে নবাব সিরাজকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার অংশীদার হচ্ছেন তখন বারবার বারন করেন গোপাল। কিন্তু উল্টে রাজা ও সভাসদদের বিদ্রুপের শিকার হন তিনি। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র বলে বসেন, নবাবের সামনে গিয়ে তাকে ভেংচি কাটতে পারলেই তিনি এই পরিকল্পনা থেকে বিরত হবেন।
নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কৃষ্ণচন্দ্রের জন্যই গোপাল চলে যান মুর্শিদাবাদে। সেখানে তাকে নবাবের সামনে প্রবেশ করতে দেওয়া না হলে তিনি এক প্রহরীর হাতে কামড়ে দেন। এরপর বিচারের নবাবের সামনে তাকে হাজির করা হলে সত্যি সত্যি নবাবকে ভেংচে দেন গোপাল। নবাব জানিয়ে দেন, পরবর্তীদিন গোপালের বিচার হবে।
এরই মধ্যে মিরজাফরকে গোপাল জানান যে তিনি নবাবের কাছে সমস্ত ষড়যন্ত্র ফাঁস করতে এসেছিলেন। কিন্তু যেহেতু তার অন্নদাতা কৃষ্ণচন্দ্রও ফেঁসে যাবেন তাই তিনি তা ফাঁস করলেন না। এরপর মিরজাফরের কুমন্ত্রনায় নবাব গোপালকে ফাঁসির আদেশ দেন। কিন্তু তাতে একটুও বিকার দেখা যায় না গোপালের। উল্টে তিনি ফের একবার নবাবকে ভেংচে দেন।
নবাব মনে করেন গোপাল বদ্ধ উন্মাদ। তাই তাকে মুক্তি দেন নবাব। কৃষ্ণনগরে ফিরে এসে গোপাল ফের একবার রাজাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু রাজা তার কথায় কর্ণপাত করেননি। অপমানিত গোপাল সকলের অলক্ষ্যেই দেশ ছেড়ে চলে যায়। তারপর আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না।