বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। ইতিমধ্যেই শাসক দলের একাধিক হেভিওয়েটের নাম জড়িয়েছে এই মামলায়। বৃহস্পতিবার যেমন জিটিএ-র (GTA) শিক্ষক নিয়োগ (Teacher Recruitment Scam) মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন ফের একবার নাম না করে হাই কোর্টের (Calcutta High Court) প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দোষারোপ করল রাজ্য।
গতকাল বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে জিটিএ শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি চলছিল। তখন রাজ্যের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার ‘তথৈবচ’ দশা নিয়ে মুখ খোলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya) তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থা খুবই জঘন্য অবস্থায় পৌঁছেছে’। একথা শুনেই অভিজিতের (Abhijit Ganguly) প্রসঙ্গ টেনে আনেন রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত।
অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, ‘জঘন্য কোনটা? এই রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নাকি একজন বিচারপতি ও তাঁর কার্যকলাপ’। এখানেই না থেমে কিশোর দত্ত (Kishore Datta) বলেন, ‘কিছু নির্দিষ্ট মামলার ক্ষেত্রে উনি উৎসাহী ছিলেন। এখন তো প্রত্যেকের কাছেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে’। এদিন নিজের বক্তব্যে অভিজিতের নাম না নিলেও রাজ্যের এজি কাকে নিশানা করছিলেন তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারোর।
আরও পড়ুনঃ ফের উত্তপ্ত শীতলকুচি! ভোট দেওয়ায় বাধা, হাঁসুয়ার কোপ বিজেপি কর্মীর হাতে ও মাথায়
উল্লেখ্য, পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দু’টি বেনামী চিঠি পেয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সেই দুই চিঠির প্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল কেন্দ্রীয় এজেন্সির সিবিআইকে প্রাথমিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন তিনি। আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে অনুসন্ধানের রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে।
এদিকে বিচারপতি বসুর সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। গতকাল জাস্টিস ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলারই শুনানি ছিল। রাজ্যের তরফ থেকে সওয়াল করা হয়, সিবিআইকে যে দুই বেনামী চিঠির প্রাথমিক অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেগুলির প্রেরকের ঠিকানা হিসেবে কেওড়াতোলা মহাশ্মশান লেখা রয়েছে। তাই ওই দুই বেনামী চিঠির বিশ্বাসযোগ্যতা কতখানি সেটা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কয়েকদিন আগে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগর উত্তর থানায় FIR করা হয়। সেখানে নাম রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, জিটিএ নেতা বিনয় তামাং সহ বেশ কয়েকজনের। গতকাল ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সব পক্ষের মতামত শোনার পর আদালতের তরফ থেকে মামলায় নির্দেশ মুলতুবি রাখা হয়।