বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মিড-ডে মিল, সাইকেল, স্কুলড্রেস সহ সরকারি স্কুলে একাধিক সুযোগসুবিধা থাকলেও প্রতি বছর কমছে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা। শিক্ষা মন্ত্রকের সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, গোটা দেশে সরকারি স্কুলে (Government School) ভর্তির হার কমছে চিন্তাজনক হারে। একইসঙ্গে বেসরকারি স্কুলে বাড়ছে ভর্তির সংখ্যা। এই প্রবণতায় উদ্বিগ্ন শিক্ষামহল।
সরকারি স্কুলে (Government School) কমছে পড়ুয়া ভর্তির হার
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে দেশে স্কুলে (Government School) পড়ুয়া ভর্তি ছিল ২৪.৮০ কোটি। ২০২৪-২৫-এ তা কমে হয়েছে ২৪.৬৯ কোটি। অর্থাৎ ১১ লক্ষ পড়ুয়া কমেছে। বিশেষত সরকারি স্কুলে ভর্তি এক ধাক্কায় নেমে এসেছে ১৩.৬২ কোটি থেকে ১২.১৬ কোটিতে। বিপরীতে, বেসরকারি স্কুলে ভর্তি বেড়েছে ৮.৪২ কোটি থেকে ৯.৫৯ কোটিতে। একইসঙ্গে বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রায় ৫০ হাজার সরকারি স্কুল, অন্যদিকে বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪৮ হাজার।
প্রথমে মনে করা হয়েছিল, কোভিড-পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য ভর্তি কমেছে। কিন্তু তিন বছরে মোট ৫০ লক্ষ পড়ুয়া কমায় বিশেষজ্ঞরা এর মধ্যে অন্য কারণ আছে বলে মনে করছেন। শিক্ষা মন্ত্রকের দাবি, তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি বদলানোয় কিছু নাম বাদ পড়েছে। আবার জন্মহার কমে যাওয়াকেও একটি কারণ বলা হচ্ছে। তবে শিক্ষকদের একাংশের মতে, আসল সমস্যা হল সরকারি স্কুলে পরিকাঠামোর অভাব, পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর ঘাটতি এবং মানসম্মত শিক্ষার অভাবই পড়ুয়া সংখ্যা কমার আসল কারণ।
বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের দাবি, কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতি আসলে শিক্ষাকে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ‘শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর অভিযোগ, ‘‘সরকারি স্কুলে শিক্ষক নেই, আধুনিক সরঞ্জাম নেই। বাধ্য হয়েই অভিভাবকেরা বেসরকারি স্কুলে সন্তানদের পাঠাচ্ছেন।’’ অন্যদিকে বঙ্গীয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘২০২০ সালের শিক্ষানীতির কুফলই এখন দেখা যাচ্ছে। এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার।’
আরও পড়ুনঃ শতাব্দীর দিকে আঙুল? মহিলা সাংসদদের নীরবতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কল্যাণ
সরকারি স্কুলে (Government School) ভর্তির সংখ্যা টানা তিন বছর ধরে কমছে। মিড-ডে মিল, স্কুল পোশাক, সাইকেলের মতো সুযোগসুবিধা থাকলেও শিক্ষার মান ও পরিকাঠামোর অভাব ভরসা জোগাতে পারছে না অভিভাবকদের। শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই প্রবণতা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে সরকারি স্কুল আরও পিছিয়ে পড়বে, আর গরিব পরিবারের সন্তানরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।