ডিপফেক ভিডিওর দাপটে উদ্বেগ বাড়ছে গোটা দেশের, সাইবার অপব্যবহার রুখতে খসড়া আইন তৈরির ঘোষণা অশ্বিনী বৈষ্ণবের

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: লোকসভায় ফেক নিউজ (Fake News) ও সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভুয়ো খবর আজ দেশের গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। তাঁর বক্তব্য, ইন্টারনেটের বিস্তার যেমন সাধারণ মানুষের হাতে তথ্য পাওয়ার শক্তি দিয়েছে, তেমনই অপপ্রচার, ভুল তথ্য ও এআই–নির্ভর ডিপফেক ভিডিওর বিস্তার দেশের অভ্যন্তরীণ পরিবেশকে বিভ্রান্ত করছে। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির উপরে কঠোর নজরদারি বাড়ানো জরুরি বলেই মনে করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক নিউজের (Fake News) দৌরাত্ম্য কমাতে বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের

অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়ো ভিডিও বা তথ্য (Fake News) তৈরি হচ্ছে এবং সেগুলি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাঁর দাবি, এই ধরনের কনটেন্ট অনেক সময় সংবিধান ও আইন মানতে অনিচ্ছুক পরিবেশ তৈরি করে। এর ফলে সমাজে বিভাজন, মেরুকরণ এবং ভুল তথ্যের মাধ্যমে মত গঠনের প্রবল ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে এমন শক্তিশালী আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে যা ভুয়ো তথ্য দমন করতে সক্ষম হবে।

আরও পড়ুন: নকশাল জোনে বীরত্ব দেখিয়ে ইতিহাস রচনা রিয়েল লাইফ নায়িকার, স্টুডেন্ট থেকে সুপার কপ—অঙ্কিতার জার্নি সিনেমার থেকেও রোমাঞ্চকর

ফেক নিউজ দমনে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই বেশ কিছু কড়া নিয়ম কার্যকর করেছে। মন্ত্রী জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ভুয়ো বা বিতর্কিত পোস্ট (Fake News) শনাক্ত হলে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে তা বাধ্যতামূলকভাবে মুছে ফেলতে হবে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে এআই–নির্ভর ডিপফেক ভিডিও শনাক্তকরণের জন্য একটি নতুন খসড়া আইনও তৈরি করা হয়েছে। এই আইনের অধীনে ডিপফেক কনটেন্ট সনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা সরিয়ে ফেলার পাশাপাশি জরিমানা এবং অন্যান্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

সংসদীয় কমিটির রিপোর্টের প্রশংসা করে অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, নিশিকান্ত দুবে-সহ কমিটির সদস্যরা ফেক নিউজ (Fake News) রোধে অত্যন্ত বিস্তারিত ও তথ্যসমৃদ্ধ রিপোর্ট পেশ করেছেন। তিনি জানান, সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বাক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তাই বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীলতা এবং ভারসাম্য বজায় রেখে পরিচালনা করছে সরকার। তাঁর মতে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করা যেমন জরুরি, তেমনই তা যাতে দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে, সেদিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

Govt to bring new act to stop fake news.

আরও পড়ুন: পুতিনের ভারত সফরের আগে বড় বার্তা! ভারত-রাশিয়ার নয়া সামরিক চুক্তিতে সবুজ সংকেত মস্কোর

শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডিজিটাল ইন্ডিয়া উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দেশে যে প্রযুক্তিগত বিপ্লব ঘটেছে, তার ফলে সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিটি নাগরিককে নিজের মত প্রকাশের শক্তি দিয়েছে। তবে এই শক্তিকে টেকসই, নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। তিনি জানান, মানুষের আস্থা অটুট রাখতেই সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নজরদারি, কঠোর আইন এবং প্রযুক্তিগত সুরক্ষা আরও জোরদার করা হবে, যাতে বিভ্রান্তিকর তথ্য সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে।