বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গুজরাটে (Gujrat) বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। একদিকে যখন বিজেপি (Bharatiya Janata Party) তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে তৎপর, আবার অপরদিকে আম আদমি পার্টি (Aam Admi Party) প্রথমবারের মতো নির্বাচনী লড়াইয়ে চমক দিতে প্রস্তুত। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি গুজরাটে সেতু বিপর্যয় ঘিরে ইতিমধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে দেশে আর এর মাঝেই এবার বড় চমক দেওয়ার পথে বিজেপি।
এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের দেশের নাগরিকত্ব প্রদান করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল কেন্দ্র। এই সূত্রে একটি নির্দেশিকা পর্যন্ত জারি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ‘নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫’ দ্বারা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতে চলেছে বলে খবর।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে যে সকল হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, শিখ এবং জৈন সম্প্রদায়ের শরণার্থীরা এসেছেন, তাদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতে চলেছে। এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দ্বারা একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেই সূত্রে গুজরাটের মেহসানা এবং আনন্দ, এই দুই জেলায় ইতিমধ্যেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর। এক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত সিএএ কার্যকর না হওয়ায় আপাতত ১৯৫৫, নাগরিকত্ব আইনের আওতাতেই উক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে চলেছে।
উল্লেখ্য, অতীতে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে সিএএ তথা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার ঘোষণা করা হলেও পরবর্তীতে বিরোধীদের চাপের কারণে সেই ঘোষণা থেকে সরে আসতে হয় কেন্দ্রকে। এক্ষেত্রে করোনা মহামারীর পর এই আইন বলবৎ করার কথা বলা হলেও বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিরোধীদের করা একটি মামলার কারণে কেন্দ্রের সেই পদক্ষেপ বেশ খানিকটা পিছিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে শেষপর্যন্ত সরকারের সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর করা সম্ভব হয়, সেটাই দেখার।
তবে উক্ত প্রক্রিয়া বলবৎ এই প্রথম নয়, গত বছর থেকেই গুজরাট, রাজস্থান হরিয়ানা এবং পঞ্জাবের বেশ কয়েকটি জেলায় অন্যান্য দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এক্ষেত্রে নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫-এর ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশকে কার্যকর করতে বলা হয়। তবে গুজরাট নির্বাচনের আগে তাদের এই ঘোষণা নির্বাচনী চমক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব আইনকে কেন্দ্র করে বহুদিন ধরেই সরগরম দেশের রাজনীতি। গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও কৌশিক সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ঋদ্ধি সেনের মত কলাকুশলীরা কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। পরবর্তীতে বিরোধী এবং নাগরিক সমাজের প্রতিবাদের কারণে পিছু হাঁটতে হয় সরকারকে।