আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশ জুড়ে শুরু হতে চলেছে নতুন কর কাঠামো। এই নতুন কাঠামোয় একাধিক পণ্যকে কর মুক্ত করা হয়েছে। তবে, তামাকজাত পণ্যের উপর এক ধাক্কায় শুল্ক (GST) বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্র। কিন্তু, সিগারেট এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষেত্রে কর বেড়ে গেলেও ব্যতিক্রম ঘটেছে বিড়িতে। সূত্রের খবর, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হতে চলা নতুন জিএসটি কাঠামোয় বিড়ির উপর কর কমে যাচ্ছে। দাম কমার ফলে জনস্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞেরা।
বিড়ির উপর ১০ শতাংশ কমানো হলো জিএসটি (GST)
এত দিন বিড়ির উপর জিএসটি (GST) ছিল ২৮ শতাংশ। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, তা কমিয়ে করা হচ্ছে ১৮ শতাংশ। অপর দিকে সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষেত্রে কর বেড়ে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, কর কমার কারণে বিড়ির বিক্রি বাড়তে পারে, বিশেষত নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে। এতে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পাবে বমি মনে করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, বিড়ি এবং সিগারেট সমান ক্ষতিকর। দিল্লি এমসের বিশেষজ্ঞ উমা কুমারের কথায়, বিড়ি ফুসফুসের রোগ, হৃদরোগ এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। ক্যানসার বিশেষজ্ঞ বিশাল রাওয়ের দাবি, সস্তা হওয়ায় গরিব মানুষের মধ্যে বিড়ি বেশি জনপ্রিয় হবে, আর এতে রোগের প্রকোপ বাড়বে। দিল্লি স্টেট ক্যানসার ইনস্টিটিউটের প্রজ্ঞা শুল্ক জানান, বিড়িতে টার, নিকোটিন ও কার্বন মনোক্সাইডের মাত্রা অত্যন্ত বেশি, যা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র সমীক্ষা অনুযায়ী, তামাকজাত দ্রব্যের দাম ১০ শতাংশ বাড়ালে খরচ ৪-৮ শতাংশ কমে যায়। ‘WHO-এর মতে, ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের তামাকজাত পণ্যে কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ কর (GST) আরোপ করা উচিত। অথচ ভারতের ক্ষেত্রে এই হার অনেক কম। সমীক্ষা বলছে, তামাকজনিত কারণে বছরে প্রায় ১.৭৭ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় দেশে।
আরো পড়ুনঃ চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে কোটি টাকা লেনদেন! সেই টাকায় হয় আলুর ব্যবসা? জীবনকৃষ্ণকে নিয়ে বিস্ফোরক ED
সিগারেটের উপর কর (GST) বাড়িয়ে বিড়ির কর কমানোর সিদ্ধান্তে প্রশ্ন উঠছে সরকারের নীতির উপর। এক দিকে জনস্বাস্থ্য রক্ষার বার্তা, অন্য দিকে সস্তা করে বিড়ি জনপ্রিয় হওয়ার পথ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিগারেট বা বিড়ি, দুটোই সমান ক্ষতিকর। তাই তামাকজাত সব পণ্যের উপর সমান ও উচ্চ শুল্কই জনস্বাস্থ্য রক্ষার একমাত্র সঠিক পথ হতে পারে।