বাংলাহান্ট ডেস্ক : মুরগি (Hen) ভেবে একটি পরিবার প্রতিপালন করেছে ময়ূর (Peacock)। ভাবতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানে (East Burdwan)। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার আঝাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মীরেপাড়া গ্রাম। পূর্ণচন্দ্র কিস্কু এই গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। সূত্রের খবর, তার এক আত্মীয় একটি মুরগির ছানা কিছু মাস আগে তাকে পুষতে দেন।
কিস্কু পরিবার এরপর খুব যত্নের সাথে সেই মুরগির বাচ্চাটিকে প্রতিপালন করতে থাকে। এরপর ছানাটি যত বড় হতে থাকে ততই পরিবারের মনে বাঁধতে শুরু করে সন্দেহ। কয়েক মাসের মধ্যে সেই ছানাটির রূপ পরিবর্তিত হয়ে যায়। আরো কিছুদিন যাওয়ার পর তারা বুঝতে পারেন এটি আদতে একটি ময়ূর।
অর্থাৎ কয়েক মাস ধরে তারা মুরগি ভেবে প্রতিপালন করেছেন ময়ূরের ছানা। অন্যদিকে ময়ূরের ছানা বাড়িতে রাখা নিয়ে একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে পরিবারকে। নিয়মিত জবাবদিহি করতে হচ্ছে বনদপ্তরকে। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ময়ূরটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কিস্কু পরিবার বনদপ্তরের কথায় সায় দিয়েছে।
মঙ্গলবার বন দফতরের কর্মীদের দল এবং বর্ধমানের সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সংস্থার সদস্যরা ময়ূরটিকে জঙ্গলে ছাড়ার জন্য পৌঁছান মীরেপাড়া গ্রামে। সারাদিন চেষ্টার পরেও ময়ূরটিকে তারা আয়ত্তে আনতে পারেননি। ময়ূরটি ঘুরে বেড়াতে থাকে বাড়ির চালা ও পাঁচিলে। এই দৃশ্য দেখে রীতিমতো চোখে জল চলে আসে ময়ূরটিকে প্রতিপালন করা কিস্কু পরিবারের সদস্যদের।
ধীরে ধীরে পরিবারের ও গ্রামের লোকেদের মায়া পড়ে যায় ওই ময়ূরের ছানার উপর। কিন্তু দেশের আইন অনুযায়ী কেউ ময়ূর পুষতে পারেন না। তাই শেষমেষ বনদপ্তর এর হাতে তুলে দিতেই হবে এই ময়ূরটিকে। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি কিস্কু পরিবারের সদস্যরা। সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ারের পক্ষ থেকে অর্ণব দাস বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন।
তিনি বলেছেন, “পুরুলিয়া থেকে এক আত্মীয় এই পরিবারের সদস্যদের একটি মুরগির ছানা উপহার দেন। কিষ্কু পরিবার মুরগি ভেবে ছানাটিকে প্রতিপালন করতে শুরু করে তাদের অন্যান্য মুরগিদের সাথে। কিন্তু কয়েক মাস পর তারা বুঝতে পারেন এটি মুরগির ছানা নয়। এটি আসলে একটি ময়ূর। অন্যান্য মুরগিদের সাথেই এই ময়ূরের ছানাটি ওই বাড়িতে বেড়ে উঠেছে।”