বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারত হল একটি কৃষিপ্রধান দেশ। পাশাপাশি, দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ নিয়োজিত রয়েছেন কৃষিকার্যে। এমতাবস্থায়, দেশের কৃষকদের কথা মাথায় রেখেই এক অভিনব কর্মযজ্ঞে সামিল হয়েছেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে Linkedin-এ থাকা একটি পোস্ট সবার নজর কেড়েছে। যেখানে গুরুরাজ দেশপান্ডে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হয়।
শুধু তাই নয়, ওই পোস্টে আরও লেখা হয়েছে যে, কিভাবে তাঁর প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ দেশপান্ডে ফাউন্ডেশন, গত ৫ বছরে ৬ হাজারেরও বেশি পুকুর তৈরি করেছে। তবে, এখানেই তিনি থেমে থাকতে চাননি। বরং, বৃহৎ পরিকল্পনার মাধ্যমে তিনি আরও ঘোষণা করেছেন যে, পরবর্তী পর্যায়ে এমন ১ লক্ষ পুকুর তৈরির কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আর এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যই হল কৃষকদের সাহায্য করা এবং তাঁদের আয় বৃদ্ধি করা। এদিকে, এমতাবস্থায়, এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে কে এই গুরুরাজ দেশ দেশপান্ডে? বর্তমান প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে তা উপস্থাপিত করা হল।
গুরুরাজ দেশপান্ডে কে? গুরুরাজ দেশপান্ডে, “দেশপান্ডে” নামেই সমধিক পরিচিত। তিনি মূলত একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং উদ্যোগপতি। আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসে Sycamore Networks নামে একটি কোম্পানি খোলেন তিনি। এই বিখ্যাত কোম্পানির কাজ হল ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত যন্ত্রপাতি তৈরি করা। এছাড়াও, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান MIT (ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি)-তে দেশপান্ডে সেন্টার ফর টেক ইনোভেশন নামে একটি প্রোগ্রাম পরিচালনা করেন।
তিনি কোথায় পড়াশোনা করেছেন: গুরুরাজ দেশপান্ডে কর্ণাটকের হুবলিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের অন্তর্ভুক্ত একজন লেবার কমিশনারেট। তিনি আইআইটি মাদ্রাজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন। এরপর স্নাতকোত্তর করতে কানাডায় যান। সেখান থেকে গুরুরাজ পিএইচডিও করেছেন।
আমেরিকায় বসতি স্থাপন করেন: মূলত, আশির দশকে, দেশপান্ডে কোডেক্স কর্পোরেশনে কাজ শুরু করেন। এই কোম্পানিটি Motorola-র একটি অংশ ছিল। তিনি তাঁর প্রফেসর প্যারেটার ব্র্যাকেটের মাধ্যমে কানাডায় এই চাকরি পান। এরপর তিনি কোরাল নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোম্পানিটির কাজ ছিল রাউটার তৈরি করা। ১৯৯৮ সাল নাগাদ, তিনি MIT-এর গবেষকদের সাথে একসাথে Sycamore Networks শুরু করেন।
এমতাবস্থায়, এক বছরের মধ্যেই বিশ্বের “সেলফ মেড” ব্যবসায়ীদের তালিকায় চলে আসেন তিনি। পাশাপাশি সেই বছরেই, ফোর্বস ম্যাগাজিন তাঁকে আমেরিকার শ্রেষ্ঠ ৪০০ জন ধনী ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
দেশপান্ডে সেন্টার ফর টেকনোলজিক্যাল ইনোভেশন: দেশপান্ডে এবং তাঁর স্ত্রী জয়শ্রী (প্রখ্যাত সমাজকর্মী সুধা মূর্তির বোন) প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে MIT-তে দেশপান্ডে সেন্টারের চালু করেছিলেন। এর পাশাপাশি তাঁরা দেশপান্ডে ফাউন্ডেশন শুরু করে প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক কার্যক্রম শুরু করেন।
এর পাশাপাশি তাঁরা আইআইটি মাদ্রাজ-এ দেশপান্ডে সেন্টার ফর ইনোভেশন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ প্রতিষ্ঠা করেন। যার উদ্দেশ্য ছিল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ব্যবহার করে সামাজিক সমস্যার সমাধান প্রদান করা। আর এই উদ্যোগ থেকেই দেশের কৃষকদের জন্য ১ লক্ষ পুকুর তৈরির ভাবনাও উঠে এসেছে। এমতাবস্থায়, পুরো দমে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা।