বাংলাহান্ট ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) যত গভীরে প্রবেশ করা যাচ্ছে ততই সামনে আসছে চমকে দেওয়ার মতো সব তথ্য। এই মুহূর্তে যাকে নিয়ে তদন্তকারীরা সবথেকে বেশি ধন্দে রয়েছেন, তিনি হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায় (Haimanti Ganguly)। ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের মুখে প্রথম তাঁর নাম শোনা যায়। হৈমন্তীকে ‘রহস্যময়ী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন কুন্তল। তদন্তে নেমে আধিকারিকরা দেখেন, হৈমন্তী নামটার সঙ্গে সত্যিই জড়িয়ে অনেক রহস্য।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে উঠে আসা আরেক নাম গোপাল দলপতির স্ত্রী হৈমন্তী। পেশায় তিনি একজন উঠতি মডেল তথা অভিনেত্রী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে টুকটাক কাজ করেছেন। একটি ছবিতে প্রতারণার ষড়যন্ত্র করায় ঘাড়ধাক্কাও খেয়েছিলেন। কিন্তু হৈমন্তীর লাইফস্টাইল কোনো প্রথম সারির অভিনেত্রীর থেকে কম কিছু ছিল না।
প্রাথমিক তদন্তের পর ‘রহস্যময়ী’ হৈমন্তী সম্পর্কে যা যা জানা গিয়েছে তা শুনলে চোখ কপালে উঠবেই। টলিউডে তেমন পরিচিতি না থাকা সত্ত্বেও অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন হৈমন্তী। উঠতি অভিনেত্রী হয়েও সেটে ভালোই দহরম মহরম ছিল তাঁর। পাঁচতারা হোটেলের পার্টি গুলোয় নিয়মিত দেখা মিলত হৈমন্তীর।
জানা যাচ্ছে, একাধিক বয়ফ্রেন্ড, বন্ধুবান্ধব ছিল হৈমন্তীর। এক দিনেই প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা উড়িয়ে দিতেন তিনি। ব্যবহার করতেন ব্র্যান্ডেড জিনিসপত্র। তাঁর একাধিক ফ্ল্যাট, অফিসের খোঁজ ইতিমধ্যেই পেয়েছে তদন্তকারীরা। এর মধ্যে কলকাতার বিবাদী বাগে এবং মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে দুটি অফিসের খোঁজ মিলেছে হৈমন্তীর।
প্রশ্ন উঠছে, মক্ষীরানির এই বিলাসিতার খরচ টানতে কে বা কারা? সূত্র মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী, হৈমন্তীর জীবনযাত্রায় বিরাট বদল আসে গোপাল দলপতিকে বিয়ে করার পরেই। কুন্তল ঘোষ জেরায় জানিয়েছেন, হৈমন্তী গোপালের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীদের সঙ্গেও হৈমন্তীর ছবি পাওয়া গিয়েছে।
মদন মিত্র, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ছবি হাতে এসেছে তদন্তকারীদের। যদিও কামারহাটির বিধায়কের দাবি, হৈমন্তীকে তিনি চেনেন না। টলিউডেও তাঁর কিছু কীর্তি সামনে এসেছে। ছবিতে নাকি তিনি সুযোগ পেতেন সুপারিশের জোরে। তাও ‘অচেনা উত্তম’ ছবিতে অন্য এক পরিচালককে ঢোকানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়েন হৈমন্তী। ছবি থেকে বের করে দেওয়া হয় তাঁকে।