অভাবের কারণে ম্যাগি খেয়ে কাটতো দিন! আজ বিশ্বকাপ জয়ের জন্য BCCI-এর সবচেয়ে বড় ভরসা এই তারকা

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: ভারতে ক্রিকেট এমন একটি খেলা যার জন্য দেশের ছেলেমেয়েদের মধ্যে আবেগের অন্ত নেই। ভারতের জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ আইপিএলের (IPL) সময়টা দেশে উৎসবের মতো পালন করা হয় এবং বছরের এই দিনগুলোতে আইপিএল নিয়ে মানুষ মেতে থাকে। গত বছরে দুটি নতুন দল আইপিএলে যোগ দিয়েছিল, যাদের মধ্যে গুজরাট টাইটান্স (Gujrat Titans) আত্মপ্রকাশের মরশুমেই পুরনো দলগুলিকে টেক্কা দিয়ে আইপিএলের খেতাব দখল করেছিল। এইবছরও সেই দলটি ফাইনালে পৌঁছে খেতাব জয়ের অত্যন্ত কাছাকাছি গিয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত চলতি বছরে তাদের রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।

তাদের সাফল্যের একটা বড় কারণ হলো হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya), যিনি গুজরাট টাইটান্সের অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম মরশুমেই কামাল করে দেখিয়েছিলেন। চোট কাটিয়ে গত বছর ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন তিনি। বর্তমানে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আইসিসি ক্রমতালিকা অনুযায়ী তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ডার। ওডিআই ফরম্যাটে আইসিসি ক্রমতালিকায় তিনি রয়েছেন দশম স্থানে। ভারতের মাটিতেই সামনের মাসে আয়োজিত হবে ওডিআই বিশ্বকাপ। আর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ তিনি। তার পারফরম্যান্সে ভর করেই দশ বছরের খরা কাটিয়ে এবার আইসিসি ট্রফি জিততে চায় রাহুল দ্রাবিড়ের ভারত।

dravid hardik

হার্দিক পান্ডিয়া তার নিজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স এবং অধিনায়কত্ব, দুইয়ের কারণেই আজকাল শিরোনাম থাকছেন। এশিয়া কাপের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচটায় তিনি ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন। নেপালের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠেছিলেন বল হাতে। লোকেরা তাকে অনুপ্রেরণা হিসাবে দেখছে। তবে তার এই জায়গায় পৌঁছনোর আগে সংগ্রামের দিনগুলিতে এমন একটি সময় ছিল যখন হার্দিক পান্ডিয়ার কাছে তার ক্রিকেট কিট কেনা, খাওয়া এবং ক্রিকেট খেলা বজায় রাখার জন্য অর্থ ছিল না। লোকে তাকে গুরুত্বও দেয়নি, ক্রিকেট খেলা ছেড়ে তাকে ধাবায় কাজ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: দ্রাবিড় ও BCCI-এর চিন্তা বাড়ালো ভারতীয় দল! সামনে এলো লজ্জাজনক রেকর্ড

হার্দিক একবার তার সংগ্রামের দিনগুলির কথা বলতে গিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে তিনি তার ডায়েট বজায় রাখতে খেলার আগে এবং পরে শুধুমাত্র ম্যাগি খেয়ে থাকতেন। পুষ্টিকর খাওয়ার পরিবর্তে তিনি ম্যাগি খেয়ে নিজের কাজ চালাতেন।যখন তিনি ক্রিকেট অনুশীলন করতেন, তখন তার কাছে সম্পূর্ন ক্রিকেট কিটও ছিল না, তাই তিনি প্রায়শই তার সতীর্থ বা সমিতির কাছ থেকে কিট ধার করতে বাধ্য হতেন।

আরও পড়ুন: বড় সমস্যার মুখে BCCI! কোচ ও ক্যাপ্টেনকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে, মন্তব্য আগারকারের

হার্দিক পান্ডিয়া আরও জানিয়েছেন যে তখন তার বাবা-ই বাড়িতে একমাত্র কাজ করতেন এবং তার পরিবারের আয় খুব বেশি না হওয়া সত্ত্বেও, তার বাবা সবসময় তাকে এবং তার ভাই ক্রুনালকে অনেক সমর্থন করেছিলেন। এছাড়াও হার্দিক তার জীবনের অনেক চ্যালেঞ্জের কথাও বলেছেন এবং তার ভক্তদের বলেছেন যে যদিও আজ তিনি একজন বলিউড তারকার মতো জীবনযাপন করেন, তবুও তিনি জীবনের এমন একটি পর্বের মধ্য দিয়ে গেছেন যখন খাবারের জন্য অর্থ সংগ্রহ করাও তার কাছে সহজ ছিল না। তার পরিবারের জন্য তার এই জায়গায় পৌঁছনো একটি বড় ব্যাপার ছিল। তিনি আজ যে জায়গায় আছেন, তা ওই ধরনের সংগ্রামী পরিস্থিতি থেকে উঠে আসা, এটি ভারতের যুবকদের জন্য একটি উদাহরণ এবং জীবনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া লোকদের জন্য তার এই লড়াইয়ের গল্প খুব বড় অনুপ্রেরণা।

 

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর