‘রিল’ নয়, ‘রিয়েল’ সাফল্যের গল্প লিখলেন হর্ষিতা দাভে, মাত্র২২ বছর বয়সেই হলেন রাজ্যের ডেপুটি কালেক্টর

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: রিল থেকে রিয়েল অসামান্য সাফল্যের গল্প (Success Story) লিখেছেন হর্ষিতা। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আজকের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রিল বানানোর নেশা এক নতুন ঢেউ তুলেছে। অনেকেই মনে করেন, এই রিলের ক্রেজ যুব সমাজকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ইন্দৌরের ২২ বছরের হর্ষিতা দাভে সেই ধারণাকে ভেঙে দিয়েছেন নিজের সাফল্যের জোরে। তিনি প্রমাণ করেছেন, যদি পরিশ্রম ও লক্ষ্যনিষ্ঠা থাকে, তবে সোশ্যাল মিডিয়া কখনও সাফল্যের পথে বাধা হতে পারে না।

মাত্র ২২বছর বয়সেই সাফল্যের (Success Story) শীর্ষে হর্ষিতা

মাত্র ২২ বছর বয়সে হর্ষিতা দাভে মধ্যপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (MPPSC)–এর প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা ২০২৪ উত্তীর্ণ হয়ে রাজ্যস্তরে নজির সৃষ্টি করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি মহিলা বিভাগে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছেন এবং সারাদেশে পঞ্চম স্থান পেয়েছেন। হর্ষিতার এই সাফল্য আজ হাজারো তরুণ-তরুণীর অনুপ্রেরণা (Success Story)।

আরও পড়ুন: ‘গোল্ডেন আওয়ার’টাই গুরুত্বপূর্ণ, পথ দুর্ঘটনায় আহত হলে টাকা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার! কোন কোন হাসপাতালে মিলবে চিকিৎসা?

হর্ষিতা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয়। তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে শতাধিক পোস্ট এবং প্রায় ১৯ হাজার অনুসারী রয়েছে। তিনি নিয়মিত সিনেমার সংলাপের মিমিক্রি করে রিল বানান ও শেয়ার করেন। তবে এই শখ কখনও তাঁর পড়াশোনায় প্রভাব ফেলেনি। স্কুলজীবন থেকেই তিনি একজন মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পরিচিত। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে সরস্বতী শিশুমন্দির ও माधব বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে তিনি আর্টস বিভাগে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি পাস করেন এবং ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০২৩ সালে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও সম্পূর্ণ করেন (Success Story)।

ছোটবেলা থেকেই হর্ষিতা অভিনয় ও বক্তৃতার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। আন্তর্জাতিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা হোক বা নাট্যমঞ্চ, প্রতিটি জায়গাতেই তিনি নিজের প্রতিভা প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু সিভিল সার্ভিসে যাওয়ার অনুপ্রেরণা তিনি পেয়েছেন তাঁর দিদিমা সুশীলা দাভের কাছ থেকে। দিদিমা একসময় প্রশাসনিক কর্মকর্তা হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ১৯৬৬ সালে সামাজিক পরিস্থিতির কারণে তাঁকে পড়াশোনা ছেড়ে বিয়ে করতে হয়। দিদিমার সেই অপূর্ণ স্বপ্নই হর্ষিতার জীবনের লক্ষ্য হয়ে ওঠে (Success Story)।

Hrishita Dave wrote her Success Story.

আরও পড়ুন:PF তোলা আরও সহজ! নতুন নীতিতে পুরো ১০০ শতাংশ টাকা পাওয়া যাবে একেবারে সহজভাবে

হর্ষিতা নিজের লক্ষ্য পূরণে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছেন, কোচিং ক্লাসে ভর্তি হয়েছেন এবং প্রতিদিনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছেন। এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় চেষ্টা। ২০২৩ সালের পরীক্ষায় তিনি প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ হলেও মেইনসে ব্যর্থ হন। কিন্তু তিনি হার মানেননি। নতুন উদ্যমে আবার প্রস্তুতি নেন এবং দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় রাজ্যের শীর্ষস্থান অর্জন করেন (Success Story)।

আজ হর্ষিতা দাভে ২২ বছর বয়সেই ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে যোগ দিতে চলেছেন। তাঁর সাফল্য প্রমাণ করে দিয়েছে, রিল বানানো কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকা কখনও স্বপ্নপূরণের পথে বাধা নয়, যদি তার সঙ্গে থাকে অধ্যবসায় ও নিষ্ঠা। হর্ষিতার পরিবারও শিক্ষায় ও সংস্কৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত। তাঁর বাবা ড. বিকাশ দাভে সাহিত্য আকাদেমির পরিচালক, মা সুনীতা দাভে একটি বেসরকারি স্কুলে হিন্দি শিক্ষিকা এবং ভাই হার্দিক দাভে একজন সংবাদ উপস্থাপক। এমন একটি পরিবারের সদস্য হিসেবে হর্ষিতা আজ দিদিমার অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করে নিজেকে রাজ্যের গর্বে পরিণত করেছেন (Success Story)।