বাংলাহান্ট ডেস্ক: দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরও বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার (Khaleda Zia) প্রয়াণে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন দেশের আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের তরফে প্রকাশিত শোকবার্তায় হাসিনা খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বলেছেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি খালেদা জিয়ার পরিবার, বিশেষত পুত্র তারেক রহমানের প্রতি সমবেদনা জানান এবং প্রার্থনা করেন যেন খালেদা জিয়ার আত্মার শান্তি লাভ হয়।
খালেদা জিয়ার (Khaleda Zia) মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ প্রতিদ্বন্দ্বী হাসিনার
শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ও সমাজমাধ্যমে শোকবার্তায় বলেন, দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে, যখন সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনৈতিক উত্তরণের পথে গভীর প্রভাব ফেলবে। জয়ের এই মন্তব্যে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার একটি ইঙ্গিতও প্রতিফলিত হয়েছে, যেখানে শেখ হাসিনা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং তাঁর আজীবনের প্রতিদ্বন্দ্বীর জীবনাবসান ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বছর শেষে সোনার দাম বাড়ল না কমল? ১০ গ্ৰাম কিনতে কত খরচ পড়বে, জানুন আজকের লেটেস্ট রেট
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার উত্থান ছিল দুটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের ধারাবাহিকতা। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসেবে একদিকে যেমন হাসিনা প্রতিষ্ঠা পান, তেমনি শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করে নিজ যোগ্যতায় খালেদা জিয়া একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পরিচয় গড়ে তোলেন। তাঁদের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেবল রাজনৈতিক ময়দানেই নয়, ব্যক্তিগত পরিসরেও আলোচিত হয়েছিল।
মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে দীর্ঘ অসুস্থতার পর খালেদা জিয়ার মৃত্যু হয়। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও প্রায় সব রাজনৈতিক দলই শোক প্রকাশ করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্ধৃতি দিয়ে সরকারি বার্তায় খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এবং শেখ হাসিনার শাসনামলে সংগ্রাম ও প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:শীতের কামর উত্তরবঙ্গে! বছর শেষের আগে আরও বাড়বে ঠান্ডা, জানুন আবহাওয়ার খবর
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতির এক দীর্ঘ ও তীব্র অধ্যায়ের সমাপ্তির ইঙ্গিত বহন করে। যে দুই নারীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা দশকের পর দশক ধরে দেশের রাজনীতিকে নির্ধারণ করেছে, তাঁদের একজন দেশান্তরিত এবং অন্যজন লোকান্তরিত হওয়ায় রাজনৈতিক মঞ্চে এক নতুন বাস্তবতার সূচনা হতে পারে।












