বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর হাসপাতালে পড়ুয়া চিকিৎসক ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণের বিচার চেয়ে আন্দোলন করা ডাক্তারদের মধ্যে অন্যতম মুখ ছিলেন অনিকেত মাহাতো (Aniket Mahato)। অনিকেত মাহাতোদের আন্দোলন রাজ্য সরকারের ভীত প্রায় নাড়িয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনায় অনিকেত মাহাতো-সহ আরও ডাক্তারদের রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় বদলি করার কথা চিন্তা করে রাজ্য সরকার। এই নিয়ে অনিকেত মাহাতো হাইকোর্টে মামলা করলে হাই কোর্ট রাজ্যের সেই সিদ্ধান্ত খারিজ করে অনিকে মাহাতোকে আরজি করে পোস্টিং দেওয়ার কথা বলে।
সম্প্রতি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর (Aniket Mahato) বদলি সংক্রান্ত রাজ্য সরকারকে আরও দু’সপ্তাহ সময় দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালত থেকে বলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্য কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানাতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই।
দু’সপ্তাহ সময় দিল হাইকোর্ট
মঙ্গলবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বেঞ্চ জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে দু’সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোকে (Aniket Mahato) আরজি কর হাসপাতালে কাজে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা দু’সপ্তাহ পরে আদালতকে জানাতে হবে।
এদিন অনিকেত মাহাতোর (Aniket Mahato) আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কপি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে জমা দেন। নথি দেখার পর বিচারপতি জানান, আগামী ২ জানুয়ারি রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনেছে কি না, তা স্পষ্ট করে জানাতে হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোকে (Aniket Mahato) উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ হাসপাতালে বদলির নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছিল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গল বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, অনিকেতের বদলির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরের সচিব স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা এসওপি মানেননি। সেই সঙ্গে অনিকেতকে অবিলম্বে আরজি কর হাসপাতালে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন অনিকেত
রায়ের পর অনিকেত মাহাতো (Aniket Mahato) জানান, যেদিন বদলির নির্দেশিকা প্রকাশ হয়, সেদিনই তাঁরা স্বাস্থ্য সচিবকে প্রশ্ন করেছিলেন ৮৭১ জনের মধ্যে কেন শুধুমাত্র ২ জনকে বদলি করা হচ্ছে এবং কীসের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত। অনিকেতের বক্তব্য, গোটা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব ছিল। সেই সময় স্বাস্থ্য সচিবের তরফে বলা হয়েছিল, রাজ্য প্রশাসন যা মনে করবে, তাই করতে পারে।
ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা, তারপর সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য
সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানায়। তবে ডিভিশন বেঞ্চও একক বেঞ্চের রায়ই বহাল রাখে। এরপর সেই নির্দেশের বিরুদ্ধেই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।

আরও পড়ুনঃ ফ্যামিলি পেনশনে বড়সড় বদল, মানবিক সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার, নতুন নিয়ম জানুন
উল্লেখ্য, অনিকেট মাহাতোর (Aniket Mahato) র্যাঙ্ক ২৪। আরজি কর হাসপাতালে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে চারটি শূন্যপদ ছিল। একটি শূন্যপদে মেধাতালিকায় অনিকেতের আগে থাকা একজনকে নিয়োগ করা হয়। বাকি দু’টি শূন্যপদে ২৬ ও ৩৪ র্যাঙ্কধারী চিকিৎসক নিযুক্ত হন। অথচ ২৪ র্যাঙ্ক থাকা সত্ত্বেও অনিকেত আরজি কর হাসপাতালে নিয়োগ পাননি। আদালতে জানানো হয়, ৮৭১ জনের মধ্যে ৮৬৯ জনের পোস্টিং এসওপি মেনেই হয়েছে। কিন্তু অনিকেত মাহাতো-সহ দু’জন চিকিৎসকের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি। এর কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজে পায়নি আদালত। এরপরই অনিকেতের বদলির সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেওয়া হয়।












