‘আদালত মধ্যযুগের নাইট নয়’, ৩২ হাজার মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের কোথায় ভুল? দেখাল হাই কোর্ট

Published on:

Published on:

High Court Sets Aside Abhijit Gangopadhyay Order Upholds Jobs of 32K Teachers
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২৩ সালের মে মাসে হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Gangopadhyay) রায়ে একধাক্কায় ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তে রাজ্যজুড়ে তোলপাড় পড়ে। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছিলেন চাকরিহারা প্রার্থীরা। মামলার আট মাসের মধ্যেই এই নির্দেশ এসেছিল।

বহাল থাকবে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি

কিন্তু বুধবার ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের সেই রায় খারিজ করে জানিয়ে দিল, ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরি বৈধ এবং বহাল থাকবে। তবে যাঁদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে আলাদা তদন্ত চলতে পারে জানানো হয়েছে।

ডিভিশন বেঞ্চ কেন সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করল?

ডিভিশন বেঞ্চ কিসের জন্য সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় খারিজ করলো তা নিয়ে বিস্তারিত কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। কারণগুলি হল –

১. ন্যাচারাল জাস্টিস মানা হয়নি

যাঁদের চাকরি বাতিল হয়, তাঁদের কাউকে নিজের বক্তব্য পেশ করতে সুযোগ দেওয়া হয়নি। কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি, কোনও শুনানিও হয়নি। ডিভিশন বেঞ্চের মতে, এভাবে কোনও পক্ষকে না শুনে তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। অর্ডারে স্পষ্ট লেখা আছে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে তাকে আগে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে।

২. মামলা এত দেরিতে করা হল কেন?

২০১৭ সালে প্রাথমিক নিয়োগ হয়েছিল। মামলা করা হল ২০২২ সালে, প্রায় পাঁচ বছর পরে। আদালতের প্রশ্ন, এতদিন কোনও অভিযোগ না তুলে হঠাৎ পাঁচ বছর পর মামলা দায়ের কেন? এই প্রসঙ্গে আদালত জানিয়েছে “যে ব্যক্তি নিজের অধিকার রক্ষায় দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকে, তার দাবি আদালত মেনে নেবে না।”

৩. দুর্নীতি প্রমাণ না করে চাকরি বাতিল কেন?

ডিভিশন বেঞ্চ জানায় এই মামলায় দুর্নীতির কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। তাই ৩২ হাজার জনকে একসঙ্গে ছাঁটাই করার যুক্তি নেই। সিঙ্গল বেঞ্চ প্রমাণ ছাড়াই এই নির্দেশ দিয়েছিল।

৪. বিচারপতি নিজে তদন্ত করতে পারেন না

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay) নিজে প্রার্থীদের আদালতে ডেকে প্রশ্ন করেছিলেন। নিজে থেকে প্রমাণ খোঁজার চেষ্টা করেছিলেন। ডিভিশন বেঞ্চের জানায় রিট মামলায় বিচারপতি নিজে সাক্ষী ডেকে তদন্ত করতে পারেন না। এটা আইনসিদ্ধ নয়। অর্ডারে আরও লেখা আছে যে,“আদালত মধ্যযুগের নাইট নয় যে মাথায় হেলমেট পরে ভাল-মন্দ খুঁজতে বেরবে।”

SSC Rules Under Fire in Calcutta HC

আরও পড়ুনঃ হঠাৎ রাজ্যে EC-র তিন অফিসার! সরাসরি ভোটারদের দরজায় হাজির, কেন?

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের ছত্রে ছত্রে কীভাবে ভুল ছিল, ডিভিশন বেঞ্চ তা স্পষ্ট করে দিয়েছে।
তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি“অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ই (Abhijit Gangopadhyay) ঠিক ছিলেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে চাকরি বহাল রেখেছে ডিভিশন বেঞ্চ।”