বাংলাহান্ট ডেস্ক:- নেপাল (Nepal infiltration) থেকে ভারতে (India) অনুপ্রবেশের চেষ্টা। “যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়”, ঠিক যেই ভয়টা পাওয়া হচ্ছিল সেটাই হল। নেপালে চলমান অশান্তির জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ভারত-নেপাল সীমান্তে। কয়েক দিন আগেই নেপালে গণআন্দোলনের সুযোগ নিয়ে একাধিক জেল ভেঙে পালিয়েছে হাজার হাজার বন্দি। আর সেই বিপুল সংখ্যক অপরাধী এবার ভারতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছে। সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) ইতিমধ্যেই নেপাল থেকে পালিয়ে আসা ৩৫ জন বন্দিকে আটক করেছে। এর মধ্যে উত্তর প্রদেশের সিদ্ধার্থনগরে ধরা হয়েছে ২২ জনকে, বিহার থেকে আটক করা হয়েছে ১০ জনকে এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী সূত্রে খবর, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নেপাল থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা (Nepal infiltration)
নেপালি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, কাঠমাণ্ডু, পোখরা ও ললিতপুরের অন্তত ১৮ টি জেল ভেঙে প্রায় ৬ হাজার বন্দি পালিয়ে গিয়েছে। কাঠমাণ্ডুর নাখু জেল ভেঙে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রবি লাচিমানের সমর্থকরা বন্দিদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। পোখরা জেল থেকে ৯০০ জন বন্দি পালিয়েছে, আর জলেশ্বর জেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলে সেখানে থাকা ৫৭৬ জনের মধ্যে একজন বাদে বাকিরা পালিয়ে যায়। নেপালের অশান্ত পরিস্থিতি (Nepal infiltration) কাজে লাগিয়েই বন্দিরা পালিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:-৭২ বছরের ঐতিহ্য টালমাটাল! মহেশতলায় বড় ধাক্কা, বন্ধের আশঙ্কায় বহু বছরের দুর্গাপুজো
ভারতের সীমান্তে মোতায়েন এসএসবি আগেই সতর্ক ছিল। নেপালের অশান্তির খবর পাওয়া মাত্রই সীমান্ত এলাকায় নজরদারি জোরদার করা হয়। বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। রক্সোল, সুপৌল, সীতামারহি জেলায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্ত অনেক জায়গায় সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে আটক হওয়া নেপালি বন্দিদের এসএসবি জিজ্ঞাসাবাদ করছে (Nepal infiltration)। আটক হওয়া ব্যক্তিদের নথি চাওয়া হলেও তারা কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। ফলে সন্দেহ হওয়াতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।
অপরাধীদের ভারতে ঢোকার প্রবণতা প্রশাসনের কাছে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে (Nepal infiltration) । কারণ বাংলাদেশে অশান্তির সময়ও অনুপ্রবেশ বেড়েছিল এবং এবার নেপালের পরিস্থিতিও একই পথে যাচ্ছে। ভারতে ঢুকে পড়া এই অপরাধীদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর মামলায় অভিযুক্ত। তাই সীমান্ত রক্ষী বাহিনী থেকে শুরু করে গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও সতর্ক হয়ে উঠেছে। সীমান্ত এলাকার গ্রামগুলোতেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে, যাতে কোনও অপরাধী স্থানীয় মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে গা ঢাকা দিতে না পারে।
আরও পড়ুন:-সুপ্রিম নির্দেশ মেনে ২৫% ডিএ মেটায় নি রাজ্য, এবার কী পদক্ষেপ হবে? স্পষ্ট উত্তর সামনে এল
নেপালে রাজনৈতিক অশান্তি ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। গণআন্দোলনের সুযোগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ায় বিপুল সংখ্যক বন্দি পালিয়ে গিয়েছে (Nepal infiltration)। এর ফলে ভারতের জন্যও বাড়ছে নিরাপত্তা সংকট। সীমান্তের পরিস্থিতি সামাল দিতে এসএসবি ছাড়াও স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। যদিও আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে, তবে প্রশাসনের আশঙ্কা—নেপালে অশান্তি যত বাড়বে, ভারতে অনুপ্রবেশের সংখ্যা ততই বাড়বে।