বাংলাহান্ট ডেস্ক : হিজাব বিতর্কের গনগনে আগুনে পুড়ছে গোটা দেশ। এবার সেই উত্তাপের আঁচ এসে লাগল বাংলাতেও। স্কুল ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা। আটকে রাখা হল শিক্ষকদেরও। কর্ণাটকের হিজাব বিতর্কের উত্তাপে কার্যতই অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদের সুতি।
অভিযোগ, ছাত্রীদের স্কুলে কালো ওড়না পরে আসতে নিষেধ করেন সুতির বহুতালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এই ঘটনা জানাজানি হতেই স্কুলে পৌঁছন পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। কথা বলতে চাওয়া হয় প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে। কিন্তু ততক্ষণে দাবানলের মতন বাড়তে শুরু করেছে উত্তেজনা। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরে কয়েক মুহুর্তেই। স্কুল চত্ত্বরে এসে জড়ো হয় স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকদের তালা দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয় একটি ঘরে। চলে অবস্থান এবং বিক্ষোভও। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। শেষ অবধি বহুক্ষণের চেষ্টায় উদ্ধার করা হয় আটক শিক্ষকদের।
জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে কর্ণাটকের উদুপি জেলায় একটি কলেজে হিজাব পরে ঢুকতে চাইলে ৬ মুসলিম ছাত্রীদের বাধা দেওয়া হয়। মুসলিম ছাত্রীদের ঘিরে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয় উগ্র হিন্দুত্ববাদী যুবকরা। চলে একের পর এক বাদ বিবাদ। এরপরই উদুপি সহ কর্নাটকের বেশ কয়েকটি জেলায় হিজাব নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়। যার জেরে দেশব্যাপী আছড়ে পড়ে বিতর্ক এবং বিক্ষোভের ঢেউ। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে কর্ণাটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় স্কুল কলেজ। মামলা গড়ায় সুপ্রিমকোর্ট অবধিও।
এর আগে হিজাব বিতর্কে কলকাতায় মুসলিম পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখালেও, এই ইস্যুতে এত বড় জনরোষের ঘটনা বাংলায় এই প্রথম। হিজাব বিতর্কে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বতোভাবে প্রস্তুত রাজ্য। প্রতিটি থানাকেই সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। পশ্চিমবঙ্গে যে ধর্মীয় ভেদাভেদ এবং সাম্প্রদায়িক বিতর্ক মেনে নেওয়া হবে না, তা স্পষ্ট করেই কার্যত বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।