বাংলাহান্ট ডেস্ক: এখন প্রতিদিন কলকাতা ও বাংলাদেশের (Bangladesh) মধ্যে মোট চারটি যাত্রীবাহী বিমান চলাচল করে। এই রুটে পরিষেবা দেয় এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, বাংলাদেশের জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ (বিজি) এবং সে দেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলা। তবে শুক্রবার এয়ার ইন্ডিয়ার একটি নির্ধারিত ফ্লাইট অপারেট করা হয়নি। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইনকিলাব মঞ্চের অন্যতম নেতা ওসমান হাদির দেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে পৌঁছনোর কারণে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট প্রায় চার ঘণ্টা দেরিতে কলকাতায় নামে, যার জেরে যাত্রী পরিষেবাতেও প্রভাব পড়ে।
বাংলাদেশে(Bangladesh) আতঙ্কে হিন্দুরা:
বাংলাদেশের (Bangladesh) বর্তমান উত্তাল পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে ভারত সরকার। সেই কারণে শুক্রবার যে তিনটি ফ্লাইটে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় যাত্রীরা এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকেরা বিস্তারিত ভাবে কথা বলেন। যাত্রীদের কাছ থেকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং সেই কথোপকথনের ভিত্তিতে তৈরি রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে বলে বিমানবন্দর সূত্রে খবর। যদিও কেন্দ্র সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে আগত যাত্রীদের উপর বিশেষ নজরদারি এখন প্রায় নিয়মিত প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সে সংক্রান্ত রিপোর্ট নিয়মিত ভাবে কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হঠাৎ করে নামল তাপমাত্রা! দক্ষিণবঙ্গে নিয়ে দারুণ ‘ভালো খবর’ দিল আবহাওয়া দপ্তর
বৃহস্পতিবার ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বাংলাদেশ (Bangladesh) জুড়ে অশান্তির ছবি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে যাত্রীদের বক্তব্য। সেই ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আগের তুলনায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে আন্তর্জাতিক যাতায়াতেও। শুক্রবার কলকাতা অভিমুখী ফ্লাইটগুলিতে যাত্রীসংখ্যা কম ছিল, যা পরিস্থিতির ভয়াবহতারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সূত্রের খবর, বর্তমানে বাংলাদেশের (Bangladesh) ঢাকা থেকে কলকাতায় আসা বাংলাদেশি যাত্রীদের একটি বড় অংশই মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করছেন। তাঁদের দাবি, মূল উদ্দেশ্য চিকিৎসা। তবে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার আশঙ্কা, কিছু ক্ষেত্রে মেডিক্যাল ভিসাকে ঢাল করে অন্য উদ্দেশ্যেও ভারতে প্রবেশের চেষ্টা হতে পারে। শুক্রবার কলকাতায় নামা অধিকাংশ বাংলাদেশিই জানিয়েছেন, তাঁরাও চিকিৎসার কারণেই এসেছেন। উল্লেখযোগ্য ভাবে, ইন্ডিগোর শুক্রবার সন্ধ্যার ফ্লাইটে মাত্র ৫৫ জন যাত্রী এসেছেন।

আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় রাজধানী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মৃত্যু ৮ হাতির! লাইনচ্যুত ৫ টি কামরা
বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শহরে আসা বহু যাত্রী জানান, যে এলাকাগুলি হিন্দু–অধ্যুষিত সেখানে তুলনামূলক ভাবে সমস্যা কম। তবে যেখানে হিন্দুরা সংখ্যালঘু, সেখানেই অশান্তি বেশি। অভিযোগ উঠেছে, ওই সব এলাকায় মিথ্যা মামলা দিয়ে ধরপাকড় চলছে এবং মারধরের ঘটনাও ঘটছে। কলকাতায় নেমে যাত্রীরা জানিয়েছেন, গোটা পরিবেশে ভয় আর আতঙ্ক কাজ করছে। অনেক পরিচিতজন নিরাপত্তার ভয়ে শাখা–সিঁদুর পর্যন্ত আপাতত তুলে রেখেছেন। কোথায়, কখন, কার উপর হামলা হতে পারে, তা নিয়ে কেউই নিশ্চিত নন বলে তাঁদের দাবি। রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড বসানো হয়েছে এবং বহু যাত্রী জানিয়েছেন, বিমান ধরতে গিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছতেও তাঁদের স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি সময় লেগেছে।












