বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে যখন লকডাউনের ফলে রীতিমতো ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। কোম্পানী গুলির মারাত্মক ছাঁটাইয়ের ফলে কাজ হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। এমনকি পরিবারকে পালন করাই হয়ে উঠেছে একটি বড় দায়, তখন আপনি কি ভাবতে পারেন ভারতের রয়েছে এমন একটি পরিবারের সদস্যসংখ্যা ১৮১।
হ্যাঁ, গল্প কথা নয় মিজোরামের চানা পরিবারের ক্ষেত্রে এটাই সত্যি। এই পরিবারের কর্তার নাম জিওনা চানা। তার নিজেরই রয়েছে ৩৯ জন স্ত্রী এবং ৯৪ টি সন্তান। মিজোরামের এই পরিবারটি ভারতের অন্যতম সর্ববৃহৎ পরিবার হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৪২ সালে শুরু হওয়া খানা খ্রিস্টান গোষ্ঠীর প্রধান ছিলেন জিওনা চানা। এখনো অবধি এই গোষ্ঠীর মোট ৪০০ টি পরিবার রয়েছে। যাদের লক্ষ্য সন্তান জন্ম দিয়ে তাদের সমাজকে আরো বড় করা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই গোষ্ঠীতে একাধিক বিবাহ স্বীকৃত। সেই সূত্র ধরেই, ৩৯ জন স্ত্রীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন জিওনা চানা।
মিজোরামের বাটওয়াং গ্রামে বাস করে এই চানা পরিবার। তাদের বাড়িটিও রীতিমতো দেখবার মতো। কারণ সব মিলিয়ে তাতে রয়েছে প্রায় একশখানা ঘর। লকডাউনের ফলে এই মুহূর্তে বেশ আর্থিক সংকটে পড়তে হয়েছে দেশের এই বৃহত্তম পরিবারটিকেও। যদিও জিওনার অনেক ছেলেই এখন নানাবিধ চাকরির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এত বড় পরিবার চালানোর খরচ মোটেই কম নয়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, তাদের সবচেয়ে বেশি টাকা ব্যয় হয় খাওয়ার খরচেই। দিনের অধিকাংশ সময় মহিলারা কাটান রান্নাঘরে। সারাদিনে দুবার খাবার জন্য খরচ হয় প্রায় ১০০ কিলো চাল এবং ডাল। কোন ক্ষেত্রে মাংস রান্না হলে লাগে প্রায় ৪০ কিলো মুরগী। তবে প্রধানত নিরামিষ খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে এই পরিবার। কারণ আমিষ খাবার রান্না হতে সময় অনেক বেশি লাগে।
শুধু যে পুরুষরাই বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন তা নয়। বাড়ির পিছনের বাগানে সবজিচাষ করেন মহিলারাও। ব্রকলি, বাঁধাকপি, সরষে ইত্যাদি নানা ধরনের সবজি তৈরি করেন তারা। পুরুষরা সাধারণত মুরগি পালন চাষবাস থেকেই পয়সা রোজকার করেন। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে ৩৮ জন নাতিনাতনীর দাদু হলেন জিওনা। ১৪ জন নববধূও রয়েছে এই পরিবারে।
স্বাভাবিকভাবেই লকডাউনে খরচ জোগানো নিয়ে তৈরি হয়েছে সংকট। কারণ এই মুহূর্তে বাজার সেভাবে না চলায় সবজি এবং মাংসের চাহিদা কমেছে। আর সেই সূত্র ধরেই আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে পরিবারটি। যদিও পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বেশকিছু মানুষ তাদের ভালোবাসেন। আর তাদের সাহায্যেই কোনভাবে দিনগুজরান হয়ে যাচ্ছে তাদের। তবে ভারতের মতো দেশে এই পরিবার যে অন্যতম আশ্চর্য, তা বলাই বাহুল্য।