বাংলাহান্ট ডেস্ক: স্বচ্ছ ভারত অভিযানে (Swachhata Campaign) বড় সাফল্য। ফেলে দেওয়া জিনিস বিক্রি করে কত কোটি টাকা আয় করল ভারত তা নিয়ে রিপোর্ট দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের সামনে এক নতুন লক্ষ্য স্থির করেছিলেন — স্বচ্ছ ভারত অভিযান। শুরু হয়েছিল দেশজুড়ে এক ঐতিহাসিক পরিচ্ছন্নতা উদ্যোগ। তখন থেকেই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে সরকারি দপ্তর থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন পর্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা নেয় এই অভিযানে। শুধু রাস্তা, দপ্তর বা জনবহুল জায়গা পরিষ্কার রাখাই নয়, এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল জনগণের মানসিকতায় পরিবর্তন আনা, যেখানে পরিচ্ছন্নতাকে সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে দেখা হবে।
স্বচ্ছতা অভিযানেই (Swachhata Campaign) কোটি কোটি টাকা আয় ভারতের
এই উদ্যোগের আর্থিক দিকও এখন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, চলতি বছরের স্বচ্ছ ভারত অভিযানে (Swachhata Campaign) মাত্র তিন সপ্তাহে সরকার আয় করেছে ৩৮৭ কোটি টাকা। ২ অক্টোবর, মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযান মাত্র ২১ দিনের মধ্যেই এমন উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। মন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, পুরো অভিযানের শেষে এই আয় কয়েক হাজার কোটিতে পৌঁছাতে পারে।
আরও পড়ুন:মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ড্রিম প্রজেক্ট! দ্রুত চালু হতে চলেছে ভারতের প্রথম স্মার্ট বিমানবন্দর
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সাল থেকে বিভিন্ন সরকারি অফিস ও দপ্তরে স্বচ্ছতা অভিযান (Swachhata Campaign) চালিয়ে পুরনো ও অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ৮৪৪.৪৬ লক্ষ বর্গফুট জায়গা খালি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকারের মোট আয় হয়েছে প্রায় ৩,৬৮৪ কোটি টাকা। ফলে, স্বচ্ছতা অভিযানের সুফল কেবল পরিবেশগত বা সামাজিক নয়, আর্থিক দিক থেকেও তা এখন এক লাভজনক উদ্যোগে পরিণত হয়েছে।
এই বছরের অভিযানে (Swachhata Campaign) নতুনভাবে যুক্ত হচ্ছে ‘ওয়েস্ট টু ওয়েলথ মিশন’। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো বর্জ্য পদার্থকে সম্পদে রূপান্তরিত করা। প্রযুক্তির মাধ্যমে যে সমস্ত বর্জ্য সাধারণত ফেলে দেওয়া হয়, সেগুলিকে পুনর্ব্যবহার বা পুনরুৎপাদনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্পদে পরিণত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে রাজ্য সরকার পর্যন্ত সবাইকে এই অভিযানে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

আরও পড়ুন:আদালতে স্বস্তিতে বিরোধী দলনেতা! শুভেন্দু অধিকারী বনাম বীরবাহা হাঁসদার মামলায় বড় নির্দেশ হাইকোর্টের
জিতেন্দ্র সিং আরও জানিয়েছেন, স্বচ্ছতা অভিযান (Swachhata Campaign) কেবল একটি নির্দিষ্ট সময়ের প্রচারমূলক কর্মসূচি নয়, বরং এটি একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া। তাঁর মতে, “এটি সরকারের একার দায়িত্ব নয়, বরং প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণই এই অভিযানের আসল শক্তি।” তাই, সরকারি দপ্তর, কর্পোরেট সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সাধারণ মানুষ— সকলের সহযোগিতাই ভারতকে একটি পরিচ্ছন্ন ও সচেতন সমাজ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
স্বচ্ছ ভারত অভিযান (Swachhata Campaign) এখন শুধুমাত্র একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা উদ্যোগ নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে ভারতের টেকসই উন্নয়নের প্রতীক। পরিচ্ছন্নতা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে এক সূত্রে বেঁধে দেশকে এক নতুন দিশায় নিয়ে যেতে চাইছে সরকার। ফলে, ‘ওয়েস্ট টু ওয়েলথ’ ধারণা বাস্তবায়িত হলে শুধু পরিবেশই নয়, দেশের অর্থনীতিও আরও শক্ত ভিতের উপর দাঁড়াবে— এমনটাই আশা প্রশাসনের।













