বাংলাহান্ট ডেস্ক- অপ্রতিরোধ্য জিএসটি (GST)! এপ্রিলের ঐতিহাসিক সংগ্রহের পর আগস্টেও ইতিবাচক প্রবণতা। ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলি (Central and State Government) আগস্ট মাসে পণ্য ও পরিষেবা কর (GST) হিসেবে মোট ১.৮৬ ট্রিলিয়ন টাকা আদায় করেছে,যা এক বছর আগের তুলনায় ৬.৫% বেশি।
ঊর্ধ্বমুখী অগাস্টের জিএসটি আদায় (GST)
ভারতের (India) পণ্য ও পরিষেবা কর (GST) আদায়ে আগস্ট মাসে সামান্য ওঠানামা লক্ষ্য করা গেলেও সামগ্রিকভাবে গত বছরের তুলনায় পরিস্থিতি অনেকটাই ইতিবাচক। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্টে জিএসটি (GST) সংগ্রহ হয়েছিল ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা, আর ২০২৫ সালের আগস্টে এই অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১.৮৬ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরে বছরে প্রায় ৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। তবে এর আগের মাস অর্থাৎ জুলাই ২০২৫-এ সংগ্রহ হয়েছিল ১.৯৬ লক্ষ কোটি টাকা, যা আগস্টের তুলনায় বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুলাই মাসে উৎসব এবং নানা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ার কারণে আদায় বেশি হয়েছিল, আর আগস্টে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় আদায়ও স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে এসেছে।
আরও পড়ুন:- মুহূর্তের মধ্যে তছনছ সবকিছু! আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৮০০
তবে এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আগস্টের জিএসটি (GST) সংগ্রহ গত বছরের তুলনায় ভালোই হয়েছে। এই আর্থিক বছরে ইতিমধ্যেই এপ্রিল মাসে জিএসটি আদায় নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে, যখন সরকার ২.৩৭ লক্ষ কোটি টাকার রাজস্ব সংগ্রহ করেছিল, যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এটি দেখাচ্ছে যে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি ধীরে ধীরে আরও শক্তিশালী হচ্ছে এবং ভোক্তা ব্যয়ের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
অগস্ট মাসে শুধুমাত্র জিএসটি (GST) নয়, সামগ্রিকভাবে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ রাজস্বও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ মাসে গ্রস ডোমেস্টিক রেভেনিউ দাঁড়িয়েছে ১.৩৬ লক্ষ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ৬.৬ শতাংশ বেশি। তবে কিছুটা ধাক্কা এসেছে আমদানি শুল্ক থেকে। তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট ২০২৫-এ আমদানি শুল্ক সংগ্রহ হয়েছে ৪৯,৩৫৪ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১.২ শতাংশ কম। বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা এবং আমদানি ব্যয়ের ওঠানামা এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বাধীনতা দিবসে ঘোষণা করেছেন, দীপাবলির আগেই জিএসটির পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কার আনা হবে। প্রধানমন্ত্রীর মতে, এই সংস্কারগুলি সাধারণ মানুষের জন্য কর রেহাই আনবে এবং ছোট ব্যবসা, বিশেষ করে মাঝারি শ্রেণির উদ্যোক্তাদের উল্লেখযোগ্য সুবিধা দেবে। তিনি স্পষ্ট করেছেন, জিএসটি চালু হওয়ার আট বছর পর এবার সময় এসেছে এটিকে আরও সহজ, কার্যকরী এবং সাধারণবান্ধব করার।
আরও পড়ুন:- ট্রাম্পের “শুল্কবোমা”-র নামমাত্র প্রভাব ভারতীয় অর্থনীতিতে! কী জানালেন মোদীর মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা?
উল্লেখযোগ্যভাবে, কেবল কেন্দ্র নয়, অনেক বিরোধী শাসিত রাজ্যও এখন জিএসটি (GST) সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দাবি, করের হার আরও যুক্তিসঙ্গত করতে হবে, যাতে ব্যবসায়ী ও সাধারণ গ্রাহক উভয়েই লাভবান হন। পাশাপাশি, মুনাফাখোরির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও উঠছে, যাতে নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠী অস্বাভাবিকভাবে বেশি সুবিধা না পায়।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান জিএসটি প্রবণতা একটি পরিণত কর কাঠামোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও মাসওয়ারি ওঠানামা হচ্ছে, সামগ্রিক রাজস্ব বৃদ্ধির ধারা ভারতের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও সম্প্রসারণকে স্পষ্ট করে তুলছে। উৎসবের মৌসুম এগিয়ে আসায় আগামী মাসগুলিতে জিএসটি (GST) আদায় আরও বাড়তে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।