১১টি ট্রাঙ্ক ভর্তি টাকা, লাইভে গণনা, হুমায়ুন কবীরের বাড়িতে বাবরি মসজিদ অনুদানের পাহাড়, কত টাকা উঠল?

Published on:

Published on:

Humayun Kabir Babri Masjid Row
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ট্রাঙ্ক ভর্তি টাকা, বাড়ির মাঝখানে ঢেলে সেই টাকা গুনছেন একাধিক মানুষ। এই দৃশ্য সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ছবির কেন্দ্রবিন্দু তৃণমূলের সাসপেন্ডেড বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। নিজেই ফেসবুক লাইভে দেখিয়েছেন অনুদানের টাকা গোনার দৃশ্য। কিন্তু কীসের এই টাকা? কেন এত বিপুল অঙ্কের নগদ অর্থ জমা হচ্ছে? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

বাবরি মসজিদের অনুদানে পাওয়া এই টাকার পাহাড়

এই টাকা বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রাপ্ত অনুদান। শনিবার, ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনেই মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। সেদিনই তিনি জানান, বাবরি মসজিদ তৈরি করতে আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা খরচ হবে। তবে অর্থের অভাব হবে না বলেই দাবি তাঁর।

৮০ কোটি এক দাতার, বাকিটা সাধারণ মানুষের

হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir) জানিয়েছেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি একাই ৮০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষও দান করছেন। সেই অনুদানের বহর দেখেই স্পষ্ট, বাবরি মসজিদ তৈরির পরিকল্পনা শুরু হওয়ার আগেই ব্যাপক সাড়া মিলেছে।

১১ ট্রাঙ্ক ভর্তি টাকা, ৩০ জনে মিলে গণনা করছে

রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যাঁরা নগদ অর্থ দান করেছেন, তাঁদের টাকা আলেম-উলামাদের উপস্থিতিতে গোনা শুরু হয়। এই গণনার দায়িত্বে রয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া’। টাকা গোনার জন্য আনা হয়েছে মেশিনও। জানা গিয়েছে, মোট ১১টি ট্রাঙ্ক ভর্তি টাকা আনা হয়। প্রায় ৩০ জন মিলেই করছে এই গণনা।

কিউআর কোডেই জমা ৯৩ লক্ষ

শুধু নগদ নয়, ডিজিটাল দানও হয়েছে বিপুল পরিমাণে। হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, কিউআর কোড স্ক্যান করেই এখনও পর্যন্ত ৯৩ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে। রাত ১২টার পরেও চলে টাকা গোনা। মোট কত টাকা জমা পড়েছে, তা এখনও চূড়ান্তভাবে জানা যায়নি। তবে কোটির গণ্ডি যে পেরিয়েছে, তা স্পষ্ট।

নির্মাণে টাকার অভাব থাকবে না, দাবি হুমায়ুনের (Humayun Kabir)

এত বিপুল অনুদান দেখে হুমায়ুন কবীরের (Humayun Kabir) দাবি, বাবরি মসজিদ নির্মাণে আপাতত টাকার কোনও অভাব থাকবে না। এখন রাজনৈতিক মহলে আলোচনা, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের ময়দানে এই বাবরি মসজিদ কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।

এদিকে নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা নিয়েও মুখ খুলেছেন হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর নতুন দলের সঙ্গে MIM-এর জোট হবে। চাইলে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও ISF-ও এই জোটে আসতে পারে। যদিও MIM-এর মুখপাত্র পাল্টা কটাক্ষ করে বলেছেন, হুমায়ুন কবীর নাকি শুভেন্দু অধিকারীর টিমের কোর মেম্বার। হুমায়ুনের নতুন দল নিয়ে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল, সিপিএম ও কংগ্রেস, তিন দলই।

তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল জল্পনা। প্রথমে ইস্তফার ঘোষণা করলেও শেষ পর্যন্ত ইউটার্ন নেন হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। সাফ জানিয়ে দেন, তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন না। তাঁর দাবি, ভোটারদের আপত্তির কারণেই সিদ্ধান্ত বদলেছেন তিনি।

Humayun Kabir Babri Masjid Row

আরও পড়ুনঃ ‘সম্মেলন নয়, ধর্মীয় শক্তি দেখাব’, ১ লক্ষ হাফেজ নিয়ে কোরান পাঠের ঘোষণা হুমায়ুনের

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার দিনেই হুমায়ুন কবীরকে (Humayun Kabir) সাসপেন্ড করে তৃণমূল। নেত্রীর সভায় এসে সেই ঘোষণা শোনার পরই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফার কথা বলেছিলেন তিনি। শনিবার কিছুটা নরম সুরে ইস্তফা নিয়ে ধোঁয়াশা রাখেন। আর রবিবার একেবারে সিদ্ধান্ত বদলে জানান, ইস্তফা দিচ্ছেন না।