বাংলা হান্ট ডেস্ক : এ যেন কোন সিনেমার গল্প। অশিক্ষিত স্বামী তার স্ত্রীকে শিক্ষিত করে তুলতে নিজের সর্বস্ব খুইয়ে বসেন। শেষে সেই স্ত্রীই ছুঁড়ে ফেলে দেয় তার স্বামীকে। কিছুদিন আগেই উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ থেকে এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা সামনে এসেছিল। আর এবার সেই ছায়া পড়ল মধ্যপ্রদেশেও। একইরকম ঘটনার সম্মুখীন হলেন মধ্যপ্রদেশের অনুপপুর এলাকার এই যুবক।
স্ত্রীকে শিক্ষিত করে তুলতে নিজের সর্বস্ব খুইয়েছেন তিনি। এবং চাকরি পাওয়ার পর সেই স্ত্রীই তাকে চিনতে অস্বীকার করছেন। এমতাবস্থায় স্বামী তার স্ত্রী এবং সন্তানকে ফিরিয়ে আনার জন্য সাহায্যের আবেদন করে ফিরছেন। ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে স্ত্রীকে পড়িয়েছিলেন তিনি। এরপর লেখাপড়া শেষ করে নার্স হওয়ার পর স্ত্রী সেই স্বামীকেই প্রত্যাখান করেন। এরপর সন্তানকে নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন তিনি।
হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে, অনুপপুর জেলার পাকড়িহা গ্রামে। জোহান ভারিয়া নামক এক ব্যক্তি তার স্ত্রী মীনাক্ষী ভারিয়ার লেখাপড়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নেন। তিনি অনুপপুর থেকে ৩০ হাজার টাকা, জয়থারি থেকে ৬০ হাজার ও কোটমা থেকে ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। এমনকি স্ত্রীর পড়াশোনার খরচ জোগানোর জন্য দুই বছর শ্রমিকের কাজও করেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মীনাক্ষীর জিএনএম ট্রেনিং শেষ করেছেন খান্ডোয়া হাসপাতাল থেকে। প্রশিক্ষণ শেষ করার পর বদলে যায় মীনাক্ষীর হাবভাব। সে আর জোহানের সাথে থাকতে চায়না। রুহি নামের ৭ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে তাদের। অবাক করা বিষয় হল, ভালোবেসেই একসাথে থাকার অঙ্গীকার করেছিলেন তারা। বাড়ির অনুমতি না পেয়ে মন্দিরে বিয়ে করেছিলেন তারা।
মীনাক্ষী পড়ালেখায় ভালো হওয়ার কারণে জোহান তাকে শিক্ষিকা অথবা নার্স হওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। অবশেষে নার্সিং-র জন্য খান্ডোয়ায় যান তিনি। মাঝে মাঝে বাড়িতে এলেও তিনি জোহানের সাথে থাকতেননা। বেশিরভাগ সময়টাই তিনি মামার বাড়িতে থাকতেন। জোহান তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বললে মীনাক্ষী তাকে ফিরে যেতে বলেন। সে সোজাসাপ্টাই জানায়, ‘আমার জীবনে অন্য কেউ এসেছে, তুমি অন্য বউকে দেখ।’
এরপর মেয়ে রুহিকে নিয়ে গুজরাটে কাজে চলে যান জোহান। মীনাক্ষী তার ভাই অমিতকে সাথে নিয়ে গুজরাটে পৌঁছায় এবং জোহানকে হত্যার হুমকি দিয়ে রুহিকে সাথে নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ। মীনাক্ষীর কথায়, ‘যার কাছ থেকে আমি আমার পড়াশোনার জন্য দেড় লাখ টাকা নিয়েছিলাম। আমি তার সাথে থাকব।’ এদিকে জোহানের দাবি, ‘আমার স্ত্রী ফিরে আসতে চাইলে তাকে আমি ফিরিয়ে নেব। তবে আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’