বাংলাহান্ট ডেস্ক : কোচবিহারের (Cooch Behar) দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ (Udayan Guha) মন্ত্রীত্ব পেলেন মন্ত্রীসভার রদলবদলের দিনেই। ওই একই দিনে নিজের ফেসবুকে তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করলেন সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া (Jagadish Chandra Barma Basunia)। ফেসবুকে তিনি লিখলেন, ‘নাও আই অ্যাম ফ্রি’ অর্থাৎ ‘আমি এখন মুক্ত’। হঠাৎ করে এই ধরনের পোস্ট ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতির অলিন্দে। জগদীশ ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন? তিনি কি দল ছাড়তে আগ্রহী?
তাঁর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিলো? ২০১১ সালের আগে তৃণমূলে যোগ দেন জগদীশ বর্মা। তারপরও তিনি কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদ পাননি আজ পর্যন্ত। স্থান পাননি তিন বারের মন্ত্রীসভাতেও। মন্ত্রীসভায় রদলবদলের সময়ও বঞ্চনা কি তাঁর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিলো? যদিও এ বিষয়ে বিধায়কের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, জগদীশবাবু আশা করেন তাঁকে কোনও একটা গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হবে। কিন্তু, তা আদতে হয়নি। দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক ফেসবুক পোস্ট নিয়ে দলের কর্মীদের আগেই সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ‘দলের কথা, দলের লড়াইয়ের কথা যখন তখন ফেসবুকে পোস্ট করা চলবে না। যারা করতে চান তাদের নিজেদের দায়িত্ব করবেন। প্রত্যেকের দলের নিজের একটা জায়গা রয়েছে।’
আমি এখন মুক্ত বিহঙ্গ : তবে এই প্রথম নয়। এর আগে গত এপ্রিলে কোচবিহারের জেলা তৃণমূলের নতুন কোর কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে স্থান না পেয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ফেসবুকে পোস্ট করেন, ‘আমি এখন মুক্ত বিহঙ্গ।’ এ নিয়ে অবশ্য তৃণমূলকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েনি বিজেপি। কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘পুরোটাই একটা মিউজিকাল চেয়ারের মতো চলছে। তৃণমূলের অনেক বর্ষীয়ান নেতারা স্থান পাচ্ছেন না। যার ফলে তারা কখনও কখনও ফেসবুকে এরকম লিখে ফেলছেন। আসলে তৃণমূলের এই গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব বন্ধ করার জন্য মমতা বন্দোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেষ্টা সফল হচ্ছে না।’
বেইমান, বিশ্বাসঘাতক : জগদীশ বর্মা এর আগেও একাধিকবার বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন দলের বিরুদ্ধেই। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০১৯ সালে একটি দলীয় সভায় তিনি বলেন ‘জেলার নেতাদের অনেকেই বিজেপির সঙ্গে মিলে কাজ করেছেন। আজ নিজেদের বড় ভাবছেন। বেইমান, বিশ্বাসঘাতক। ২০১৯-এ যাঁরা বিজেপিকে সাহায্য করেছেন, তাঁরাই আজকের নেতা। কে কত বড় নেতা, ২০২১-এ বোঝা যাবে।’