বাংলাহান্ট ডেস্ক : ব্যস্ত রাস্তায় দ্রুত সাইকেল চালাচ্ছেন এক মাঝ বয়সী ব্যক্তি, সাইকেলের পিছনে বসে এক খুদে। ছোট্ট ছেলেটি চিৎকার করে বলছে, “বাবা, আরো জোরে চালাও, আরেকটু জোরে..”! বনগাঁর (Bongaon) ব্যস্ত রাস্তায় এহেন চিত্র দেখে অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। প্রথমে কেউই বুঝে উঠতে পারেননি ব্যাপারটা ঠিক কী!
কিন্তু পরবর্তীকালে যারা যারা এই ছোট্ট ছেলেটির কাহিনী শুনছেন তারাই অবাক ও স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আসল ব্যাপারটা ঠিক কী? বনগাঁর ব্যস্ত রাস্তায় বাবা ও ছেলের কান্ড দেখে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। সাইকেল চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাবা, আর সাইকেলের পিছনে বসে আরও জোরে সাইকেল চালানোর কথা বলছিল ছোট্ট ছেলেটি।
আসলে এরা দুজন ধাওয়া করেছিলেন একটি টোটোকে। কিন্তু টোটোর গতির সাথে পাল্লা দিতে পারেননি তারা। এরপর সাইকেল থেকে নেমে ছেলেটি দৌড়াতে শুরু করে। কিন্তু শেষমেষ ব্যর্থ হয় তাতেও। ঠাকুরনগরের বাসিন্দা দিবাকর মন্ডল তার মেয়ের সাথে গিয়েছিলেন বনগাঁতে। সেখান থেকেই ফিরছিলেন বাবা আর মেয়ে।
ফেরার সময় দিবাকর বাবু মেয়েকে নিয়ে বনগাঁর মতিগঞ্জ থেকে টোটোয় চেপে বসেন স্টেশনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। এমন সময় তার পকেট থেকে পড়ে যায় বহু মূল্য আইফোন। ছোট্ট তৌফিক দেখতে পায় সেটি। এরপর সে ওই ফোনটিকে কুড়িয়ে বাবার সাইকেলে চেপে ধাওয়া করে ওই টোটোর পিছনে।
টোটোর গতির সাথে বাবার সাইকেল পাল্লা দিতে পারছে না দেখে সে সাইকেল থেকে নেমে দৌড়াতে শুরু করে টোটোর পিছনে। কিন্তু তবুও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় তাকে। তবে পরবর্তীকালে সে মোবাইল ফোনটি নিয়ে হাজির হয় বনগাঁ থানায়। প্রথমে তৌফিককে দেখে চমকে গিয়েছিলেন থানার পুলিশ অফিসারেরাও।
এরপর পুলিশের উদ্যোগে থানায় ডাকা হয় ফোনটির মালিককে। থানা থেকে খবর পেয়ে শীঘ্রই বনগাঁ থানায় এসে হাজির হন দিবাকর মন্ডল। হারানো ফোন ফিরে পেয়ে যতটা না খুশি তিনি, তার চেয়েও বেশি খুশি ১০ বছরের তৌফিকের এই চেষ্টা ও সততা দেখে। আবেগতাড়িত হয়ে দিবাকর বাবু বলেন, একটা ছোট্ট বাচ্চা যে এরকম কাজ করতে পারে তা কল্পনারও অতীত।