বাংলাহান্ট ডেস্ক: ওয়াশিংটনে নতুন ধরনের বার্ড ফ্লু (Bird Flu) সংক্রমণের ঘটনা ঘিরে ফের উদ্বেগ ছড়াল বিশ্বজুড়ে। মানবদেহে আগে কখনও না পাওয়া এইচ৫এন৫ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন গ্রে হারবার কাউন্টির এক বাসিন্দা। চলতি মাসের শুরুতেই তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। স্টেট হেলথ অথরিটির মতে, আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে যে বার্ড ফ্লু স্ট্রেইনের হদিস মিলেছে, তা এই প্রথম মানবদেহে পাওয়া গেল। ফলে আবার বড়সড় সংক্রমণ বা মহামারির সম্ভাবনা ঘিরে আশঙ্কা বাড়ছে। যদিও ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানিয়েছে, বৃহত্তর জনসংখ্যার মধ্যে এখনই এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।
ওয়াশিংটনে নতুন ধরনের বার্ড ফ্লু (Bird Flu) সংক্রমণে আতঙ্ক
আক্রান্ত ব্যক্তি কীভাবে সংক্রমিত হলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে চিকিৎসকদের ধারণা, পোল্ট্রি ফার্মে কাজ করার সময় তিনি সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন। শীতকাল পরিযায়ী পাখিদের মরশুম হওয়ায় এই সময়ে বার্ড ফ্লু (Bird Flu) ছড়ানোর প্রবণতা বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাধারণত লালা, মিউকাস, মল বা দুধের মাধ্যমে পশুপাখি থেকে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে। গত কয়েক বছরে আমেরিকায় বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ গৃহপালিত পশুপাখি ছাড়াও কিছু স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যেও দ্রুত ছড়িয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আমেরিকায় অন্তত ৭০ জন মানুষের দেহে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ ধরা পড়েছে এবং এদের মধ্যে এক বয়স্ক রোগীর মৃত্যু হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে।
আরও পড়ুন:লালকেল্লা বিস্ফোরণ স্থলে মিলল সেনা-ব্যবহৃত ৯ মিমি কার্তুজ, বাড়ছে রহস্যের ঘনঘটা
ওয়াশিংটন স্টেট কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সকলের তদারকি শুরু করেছে। দেখা হচ্ছে, তাঁদের কারও মধ্যে কোনও ফ্লু (Bird Flu)-জাতীয় উপসর্গ দেখা দিয়েছে কি না। প্রয়োজনে তাঁদেরও পরীক্ষার আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। যদিও এখনও পর্যন্ত মানবদেহ থেকে মানবদেহে সংক্রমণের কোনও নিদর্শন মেলেনি, তবু চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন যে ভাইরাসটির নতুন রূপান্তর ভবিষ্যতে ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

আরও পড়ুন:ট্রাম্পের পরিকল্পনা ফের হল ব্যর্থ? অক্টোবরে রাশিয়া থেকে কত তেল কিনল ভারত?
চিকিৎসকদের মতে, আক্রান্তদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই হালকা উপসর্গ দেখা গেছে—চোখ লাল হওয়া বা জ্বর। তবে কিছু রোগীর অবস্থার অবনতি হয়েছে এবং তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই সরাসরি কোনও পশু বা পাখির সংস্পর্শে এসেছিলেন। সিডিসি জানিয়েছে, যাঁরা খামারে কাজ করেন বা পশুপাখির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত, তাঁদের অবশ্যই গ্লাভস, মাস্কসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে পাখির মল পরিষ্কার করার সময় ব্লিচ মেশানো জল বা লাইজল ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নাগরিকদের কাঁচা দুধ ও চিজ না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং ফ্লু-শট নেওয়ার ওপরও জোর দিয়েছে।
এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট আরও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ থাকলেও, সতর্কতা ও সঠিক সুরক্ষা মেনে চললে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলেই মত জনস্বাস্থ্য কর্তাদের।












