১৫ বছর বয়সে ছাড়েন স্কুল! আজ দাঁড় করিয়েছেন ১ লক্ষ কোটির কোম্পানি, চমকে দেবে ইন্দরের সাফল্যের কাহিনি

Published on:

Published on:

Inder Jaisinghani's Success Story will amaze you.
Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে কিভাবে সাফল্যের (Success Story) শিখরে পৌঁছানো যায় তাঁর জলজ্যান্ত উদাহরণ ইন্দর জয়সিংহানি। মুম্বইয়ের লোহার চাওলে এক সাধারণ পরিবারে জন্মেছিলেন ইন্দর জয়সিংহানি। ছোটবেলা থেকেই আর্থিক অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। মাত্র ১৫ বছর বয়সে পরিবারকে সাহায্য করতে পড়াশোনা ছেড়ে কাজে নামতে হয়েছিল তাঁকে। অল্প বয়সেই কঠোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবনের বাস্তবতা বুঝেছিলেন ইন্দর। কিন্তু এই সীমাবদ্ধতা তাঁকে থামিয়ে রাখতে পারেনি। পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে তিনি ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছিলেন নিজের স্বপ্নের ভিত্তি। সেই দৃঢ় মানসিকতা থেকেই পরবর্তীকালে তিনি প্রতিষ্ঠা করবেন দেশের অন্যতম সফল ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল ব্র্যান্ড— পলিক্যাব।

ইন্দর জয়সিংহানির অসাধারণ সাফল্যের কাহিনি (Success Story):

১৯৬৮ সালে ইন্দর জয়সিংহানি তাঁর ভাইদের সঙ্গে পলিক্যাব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। একটি ছোট গ্যারেজে সীমিত সম্পদ নিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁদের যাত্রা। প্রথমদিকে পলিক্যাব কেবল বৈদ্যুতিক তার তৈরি করত এবং বাজারে জায়গা পাকা করতেও ছিল তীব্র প্রতিযোগিতা। আর্থিক সংকট, যন্ত্রপাতির অভাব এবং বাজারে পরিচিতি না থাকা— সব মিলিয়ে সংগ্রামের পাহাড় পেরোতে হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু ইন্দর জয়সিংহানি মান এবং বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর জোর দেন। ধীরে ধীরে স্থানীয় বাজারে তাঁদের তার ও কেবল জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে এবং কোম্পানির পরিচিতি বাড়তে থাকে (Success Story)।

আরও পড়ুন:‘অত্যন্ত চাপের মধ্যে রয়েছি..’, SSC মামলায় আদালতে বললেন কল্যাণ, কি নির্দেশ দিলেন জাস্টিস সিনহা?

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পলিক্যাব পণ্যের পরিধি বিস্তৃত করে। তারা তার এবং কেবলের পাশাপাশি সুইচ, এলইডি লাইট, ফ্যান, সুইচগিয়ার, সৌর পণ্যসহ একাধিক ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন শুরু করে। ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ফিনান্স কর্পোরেশন (IFC), যা বিশ্বব্যাঙ্কের ইক্যুইটি ফান্ড, পলিক্যাবের একটি অংশীদারিত্ব অধিগ্রহণ করে। এই বিনিয়োগ কোম্পানির বৃদ্ধিতে আরও গতি আনে। ২০১৯ সালে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর পলিক্যাবের মূল্য উর্ধ্বমুখী হতে থাকে। ১৯ অগাস্ট ২০২৫-এ পলিক্যাব ইন্ডিয়ার বাজারমূল্য দাঁড়ায় ১,০৭,৮৬৪.৯৭ কোটি টাকা, যা প্রতিযোগী হ্যাভেলসের ৯৮,২৫১.৮৯ কোটি টাকার বাজারমূল্যকেও ছাড়িয়ে যায় (Success Story)।

ইন্দর জয়সিংহানির ব্যক্তিগত সাফল্যও (Success Story) সমানভাবে উজ্জ্বল। ফোর্বস ইন্ডিয়ার হিসাবে তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ বর্তমানে ৮.৬ বিলিয়ন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৫,০০০ কোটি টাকা। ২০২২ সালে যেখানে তাঁর নিট সম্পত্তি ছিল ৩.৩৫ বিলিয়ন ডলার, সেখানে মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে বৃদ্ধির হার বিস্ময়কর। এত সম্পদ সত্ত্বেও তিনি সরল ও নীতিনিষ্ঠ জীবনযাপন করেন। পরিবারকে সময় দেওয়াই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় আনন্দ। তাঁর বিশ্বাস— নৈতিকতা, মান বজায় রাখা এবং কঠোর পরিশ্রমই দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের মূলমন্ত্র।

Inder Jaisinghani's Success Story will amaze you.

আরও পড়ুন:দুর্গাপুজোর পর UNESCO-র ওয়ার্ল্ড কালচারাল হেরিটেজ লিস্টে এবার দীপাবলি! উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী

পলিক্যাবের আধুনিকীকরণ ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নেও তাঁর অবদান অপরিসীম। তাঁর নেতৃত্বেই প্রতিষ্ঠিত হয় অত্যাধুনিক উৎপাদন ইউনিট ও গবেষণা কেন্দ্র, যা পণ্যের গুণমান, উৎপাদনশীলতা ও বাজার সম্প্রসারণে বড় ভূমিকা রাখে। বর্তমানে পলিক্যাব ইন্ডিয়ার ২৭টি উৎপাদন কারখানা রয়েছে এবং কোম্পানি ৮৪টিরও বেশি দেশে পণ্য রফতানি করে। সৌরশক্তি, প্রতিরক্ষা, অবকাঠামো, ইলেকট্রনিক্স থেকে রিয়েল এস্টেট— বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে পলিক্যাবের কেবল ও পণ্যের চাহিদা রয়েছে। মুম্বইয়ের এক সাধারণ ছেলের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে ওঠা এই সাফল্যের গল্প (Success Story) আজ ভারতের শিল্পক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।