ভারত সরকার এখন শত্রুদেশগুলিকে হাতে নয় বরং পাতে মারার পরিকল্পনা করে ফেলেছে। সব শত্রুকে মিলিটারি ক্ষমতা দিয়ে জবাব দিতে হবে এমনটা নয়, কিছু দেশকে কূটনৈতিকভাবেও জব্দ করা যায়। আর সেই পথেই কাজ করছে বর্তমানের ভারত সরকার। তুরস্ক, এবং মালয়েশিয়া এই দুটি দেশই কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের এজেন্ডাকে সমর্থন করছিল। তবে গত এক সপ্তাহে যা ঘটেছিল তা দেখে বলা যেতে পারে যে ভারত আর এই দুটি দেশকে ক্ষমা করার মুডে নেই। তুরস্কের সাথে ২.৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি বাতিল করার পরে ভারত এখন মালয়েশিয়াকে অর্থনৈতিক ধাক্কা দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া থেকে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ভারত মন্থন করছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি নিবদ্ধ করা আইটেমটি হবে ‘পাম অয়েল’। ভারত বর্তমানে মালয়েশিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে পাম তেল আমদানি করে। তাই ভারত যদি মালয়েশিয়ার আমদানিকে নিষিদ্ধ করে তবে মালয়েশিয়ার অর্থনীতির জন্য এটি দুঃস্বপ্নের থেকে কম কিছু হবে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ভোজ্যতেল তেলের ব্যবহারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পাম তেল রয়েছে। ভারত প্রতি বছর নয় মিলিয়ন টন পাম তেল আমদানি করে। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার বড় অংশ রয়েছে। ২০১৯ সালের প্রথম নয় মাসে ভারত মালয়েশিয়া থেকে সর্বোচ্চ ৩৯ লক্ষ টন তেল আমদানি করেছে।
এগুলি ছাড়াও ২০১৬ সালের তথ্য অনুসারে মালয়েশিয়া থেকে আমদানিকৃত সামগ্রীর প্রায় ২৬ শতাংশ পাম তেলের রয়েছে। গত মাসে ভারত সরকার মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা পাম অয়েলে আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। এখানে লক্ষণীয় যে ভারত মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা পাম অয়েল নিষিদ্ধ করলে এটি কেবল মালয়েশিয়ারই সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে না, তবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্দোনেশিয়ার পক্ষে এটির লাভজনক হবে। একই সাথে, ইন্দোনেশিয়াও চায় ভারত সরকার তাদের কাছ থেকে পাম অয়েলের আয়তক্ষেত্রটি বাড়িয়ে তুলুক।
এই বিষয়ে মুম্বাই-ভিত্তিক এক তেল ব্যবসায়ী বলেছেন যে মালয়েশিয়া থেকে পাম তেলের আমদানি নিষিদ্ধ করা হলেও ভারতে ভোজ্যতেলের তেলের কোনও অভাব হবে না। তবে এখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যাটি মালয়েশিয়ার হয়ে থাকবে যার পাম তেল অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মালেশিয়া পাকিস্তানকে সমর্থন করে, ভারত বিরোধিতা করে কি ভুল করেছি তার জবাব এবার হাতে নাতে পাবে। ভারত থেকে বহু সংখ্যায় পর্যটক মালয়েশিয়া যান, সেক্ষেত্রেও ভারত চাইলে মালেশিয়াকে বড়ো আর্থিক ঝটকা দিতে সক্ষম হবে।