বাংলাহান্ট ডেস্ক:- চলতি বছরেই পহেলগাঁওয়ের মতো ঘটনা, তারপরেও ‘শত্রু’ দেশের বিপদে আরও একবার ঝাঁপিয়ে পড়ল ভারত (India)। উত্তরের বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে ভারী বৃষ্টির জেরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ থেকে জল ছাড়তে হতে পারে ভারতকে। যার জেরে তাওয়ি নদীর জলস্তর বেড়ে বন্য়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই মানবিকতার খাতিরে পাকিস্তানকে আগেভাগেই বন্যার সতর্কবার্তা পাঠিয়ে রাখল ভারত।
পাকিস্তানের ত্রাতা ভারত (India)
ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে ঠেকলেও ‘মানবিকতার খাতিরে’ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ফের পাকিস্তানকে (Pakistan) সতর্ক করল নয়াদিল্লি (New Delhi)। সাম্প্রতিক সময়ে জম্মু ও কাশ্মীরসহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে একাধিক বাঁধ থেকে জল ছাড়তে হতে পারে। এর ফলে জম্মুর উপর দিয়ে প্রবাহিত তাওয়ি নদীর জলস্তর হঠাৎ বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাওয়ি নদী চন্দ্রভাগার একটি উপনদী, আর চন্দ্রভাগা নিজেই সিন্ধুর উপনদী হিসেবে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে। ফলে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্লাবন হলে তার প্রভাব সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানেও পড়তে বাধ্য।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, এ কারণেই ভারত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ইসলামাবাদকে একাধিকবার সতর্ক করে রেখেছে। সোমবারই নয়াদিল্লির বিদেশ মন্ত্রক পাকিস্তানকে সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছিল। পরে মঙ্গলবার ও বুধবারও একই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পিটিআইকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বাঁধগুলির লকগেট খুলে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, যার ফলে তাওয়ি নদীতে আকস্মিক জলের স্রোত নামতে পারে।
এদিকে টানা বর্ষণে জম্মু ও কাশ্মীরে ইতিমধ্যেই একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের যাওয়ার রাস্তায় ধস নামার ঘটনায় অন্তত ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলার পাশাপাশি প্লাবনের সম্ভাবনা নিয়েও সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। এই প্রেক্ষাপটেই সীমান্তের ওপারেও যাতে প্রাণহানি না হয়, সেই কারণে পাকিস্তানকে নিয়মিত সতর্ক করে দিচ্ছে ভারত।
আরও পড়ুন:- যুদ্ধ থামাতে গিয়ে “ডাহা ফেল”, ব্যর্থ হয়ে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মিসাইল দিচ্ছেন ট্রাম্প, চাপ বাড়বে রাশিয়ার?
উল্লেখ্য, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলচুক্তি অনুযায়ী এ ধরনের তথ্য আদান-প্রদান কমিশনার স্তরে হওয়ার কথা। কিন্তু পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরে নয়াদিল্লি ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয় এবং সিন্ধু জলচুক্তি কার্যত স্থগিত রাখা হয়। তবুও সাম্প্রতিক দুর্যোগ পরিস্থিতিতে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিকেই অগ্রাধিকার দিয়ে ভারত প্রতিবেশী দেশকে আগাম সতর্ক করছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক যতই তিক্ত হোক না কেন, প্রাণহানি রোধ করাই এখন নয়াদিল্লির মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছে সরকারি সূত্র।