বাংলাহান্ট ডেস্ক:- গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তির পুনর্নবীকরণ ঘিরে ফের আলোচনায় বসতে চলেছে ভারত ও বাংলাদেশের (India-Bangladesh) সরকারি কর্মকর্তারা। বর্তমান চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মাসে। তাই তার আগেই দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে নতুন করে চুক্তি নবীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হবে। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল হবে ১০ সদস্যের। সেই দলের নেতৃত্বে থাকবেন আবুল হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের বৈঠকে নিয়মমাফিক আলোচনাই হবে এবং চুক্তির শর্তাবলি কীভাবে কার্যকর হচ্ছে, তার পর্যালোচনা হবে।
ফের মুখোমুখি ভারত-বাংলাদেশ (India-Bangladesh)
প্রসঙ্গত, যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে মূলত গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তি (Ganges Water Sharing Treaty) মানা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হয়। সাধারণত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের ফরাক্কা ব্যারাজে থাকেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। সেখান থেকে কত জল ছাড়া হচ্ছে, কত জল যাচ্ছে বাংলাদেশের দিকে, তার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখা হয়। এরপর ১০ দিনের গড় হিসেবে হিসাব করা হয় কোন দেশ কতটা জল পাচ্ছে। ১৯৯৬ সালে দুই দেশের মধ্যে গঙ্গার জল চুক্তি হয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। সেই সময়ই ফরাক্কার জলবণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন মিটিয়ে নতুন দিশা খুঁজে বের করা হয়েছিল।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৪ সালে ভারত সফরে এসে গঙ্গা চুক্তি নিয়ে আবারও আলোচনা করেছিলেন শেখ হাসিনা। দিল্লি সফরে তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকেও এই প্রসঙ্গ গুরুত্ব পেয়েছিল। তবে পরবর্তীকালে বাংলাদেশের ক্ষমতায় পরিবর্তন আসে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতনের পর মসনদে বসেন মহম্মদ ইউনুস। তাঁর সরকার চলতি বছরের মার্চ মাসেই নদী কমিশনের প্রতিনিধি দল ভারতে পাঠিয়েছিল। এবার ফের আবুল হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসছেন (India-Bangladesh)।
তবে গঙ্গার জল চুক্তি ছাড়াও বৈঠকে তিস্তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে কূটনৈতিক মহলের দাবি। তিস্তা নদী নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের (India-Bangladesh) মধ্যে বহুদিন ধরেই মতপার্থক্য রয়েছে। সম্প্রতি এই প্রকল্পে যোগদানের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চিন। হাসিনা জমানায়ও ২০২৪ সালে বেজিং জানিয়েছিল, তিস্তা প্রকল্পে তারা কাজ করতে চায়। সেই সময় হাসিনার ভারত সফরে মোদী সরকারের পক্ষ থেকেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে, ভারত যৌথভাবে তিস্তা উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত হতে চায়। ঢাকা ফিরে হাসিনা জানিয়েছিলেন, ভারত ও চিনের উভয় প্রস্তাবই খতিয়ে দেখা হবে। যদিও তার পরেই রাজনৈতিক অস্থিরতায় পতন ঘটে হাসিনার সরকারের।
আরও পড়ুন:- ওলির পর প্রধানমন্ত্রী পদে একজন ব়্যাপার? ‘নতুন’ নেপালের দায়িত্বে কে এই বালেন শাহ?
এই প্রেক্ষাপটে নতুন নদী কমিশন বৈঠক কূটনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তি নবীকরণকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক কোন পথে এগোয়, তার দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ (India-Bangladesh) দুই দেশের রাজনৈতিক মহল।