বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে রান না পাওয়ায় তাকে নিয়ে ফের সমালোচনা শুরু হয়েছিল। অনেকেই অভিযোগ তুলেছিলেন যে দুর্বল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে শতরান করার ব্যাপারে আরও শক্তিশালী এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সাফল্য পাওয়ার সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। বিরাট কোহলি আসলে ফর্মে ফেরেননি, শুধুমাত্র গুরুত্বহীন একটি ম্যাচে কিছু রান করেছেন। কিন্তু আজ দুর্দান্ত ব্যাটিং করে সেই সমালোচকদের জবাব দিলেন বিরাট। সেইসঙ্গে অক্ষর প্যাটেল, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়াদের অসাধারণ পারফরম্যান্সে ভর করে অজিদের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতে নিলো ভারত।
প্রথমে দশের সময় থেকেই আজ ভাগ্য সহায় ছিল রোহিতের। নাগপুরের মত হায়দরাবাদেও টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন হিটম্যান। কিন্তু অত্যন্ত আগ্রাসী ব্যাটিং করে ভারতীয় বোলিং লাইনআপকে রীতিমতো চাপে ফেলে দিয়েছিলেন অসি ওপেনের ক্যামেরুন গ্রিন। ২১ বলে ৫২ একটি দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলে তিনি ভুবনেশ্বর কুমারের শিকার হয়ে ফেরেন।
টপ অর্ডারে গ্ৰিনের দুর্দান্ত ব্যাটিং বাদে বাকি অজি ব্যাটাররা হতাশ করেছিলেন। ব্যর্থ হন অ্যারন ফিঞ্চ, স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো তারকা ক্রিকেটাররা। তারপর অজিদের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন ইঙ্গলিশ এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএল খেলা যাওয়া টিম ডেভিড। মাঝে ইঙ্গলিশ আউট হয়ে ফিরে গেলেও দুর্দান্ত অর্ধশতরান করেন ডেভিড। ২৭ বলে ৫৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন তিনি। শেষদিকে ড্যানিয়েল স্যামসের ব্যাটিংও অজিদের ভালো জায়গায় পৌঁছতে সাহায্য করে। গত দুই ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও ভারতের ডেথ বোলিং নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল। ভুবনেশ্বর কুমার দু-একবার শেষের ওভার গুলিতে ব্যর্থ। বুমরা ফিরলে সকলেই আশা করেছিলেন যে ভারতীয় বোলিংয়ের উন্নতি ঘটবে। কিন্তু সেই বুমরাই আজকে নিজের নির্ধারিত ৪ ওভারে ৫০ রান দিয়েছেন। তোমহারে মার খাওয়ার পর একেবারে শেষ ওভারে বল করতে এসে হর্ষল প্যাটেল কিছুটা ভালো বোলিং করেন নয়তো ১৮৭ রানের থেকেও টার্গেট দিতে পারতো অস্ট্রেলিয়া। ভারতের হয়ে আজ ৩ উইকেট নেন অক্ষর। নিচের প্রথমদিকের ওভার গুলিতে কিছুটা রান বিলিয়েছেন কিন্তু পরের দিকে উইকেট তুলে সেই খেসারত পূরণ করে দিয়েছিলেন তারকা বাঁ-হাতি অফস্পিনার।
রান তাড়া করতে নেমে ৪ ওভারের মধ্যে রোহিত এবং রাহুলকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। কিন্তু আজ ভারতের পরিত্রাতা রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন বিরাট কোহলি। সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গী করে ভারতকে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। নিজে কখনোই অতিরিক্ত আগ্রাসী হননি, কিন্তু সময়ে সময়ে বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন শট খেলে বাউন্ডারি কুড়িয়ে তিনি ছন্দে রয়েছেন সেটা বেশ বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন চিকু। অপরদিকে অভাবনীয় আগ্রাসী ব্যাটিং করেন সূর্যকুমার যাদব। যেভাবে অজি পেসারদের বিরুদ্ধে ছক্কা হাঁকাচ্ছিলেন তিনি, তাতে বোঝা যাচ্ছিল যে তার আত্মবিশ্বাস কোন পর্যায়ে রয়েছে।
শেষপর্যন্ত ৫ টি চার এবং ৫ টি ছক্কা সহ ৩৬ বলে ৬৯ গানের একটি তথ্য ইনিংস খেলে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে লং অফে ফিল্ডার থাকা সত্বেও বড় শট মারতে গিয়ে অজি অধিনায়কের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তিনি আউট হওয়ার পর কিছুটা চাপ বেড়েছিল ভারতীয় দলের ওপর। চেষ্টা করেও বেশ কিছুক্ষণ বড় শট খেলতে পারেননি কোহলি এবং নতুন ক্রিজে আশা হার্দিক পান্ডিয়া। শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য ৩২ রান প্রয়োজন ছিল ভারতের। আমি থেকেই ওভারে একটি বড় শট খেলে বাকিবল গুলিতে রান নিয়ে লক্ষ্য অর্জন করার নীতি নেন কোহলি ও হার্দিক তাদের এই নীতি কাজেও লাগে। যদিও শেষ ওভারে বিরাট কোহলির উইকেট তুলে কিছুটা যে ফেরার চেষ্টা করেছিল অজিরা কিন্তু প্রথম বলেই ছক্কা মেরে হার্দিকদের কাজটা সহজ করে দিয়ে গিয়েছিলেন কোহলি। শেষপর্যন্ত এক বল বাকি থাকতেই ম্যাচ শেষ করে দেন হার্দিক। ৪৮ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা সহ ৬৩ প্রাণের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন বিরাট। ১৬ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন হার্দিক।