বাংলাহান্ট ডেস্ক : হিজাব বিদ্রোহে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি ইরানে (Iran)। সরকারি নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে যুব সমাজ। হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে ইসলামের নামে মহিলাদের পর্দার আড়ালে রাখার প্রতিবাদ করছেন তাঁরা। হাত গুটিয়ে নেই ইরান শাসকও। বিক্ষোভ দমনে কড়া পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। বিক্ষোভকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে পুলিস। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসংঘে (UN) ইরান বিরোধী একটি প্রস্তাবে ভোট দিল না ভারত (India)।
গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ইরানের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পেশ করে। সেখানে মানবাধিকার হননের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তৈরির কথাও বলা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ইরানে বিক্ষোভকারীদের উপর প্রশাসনের জুলুম ও তাঁদের মানবাধিকার হরণের বিষয় আন্তর্জাতিক স্তরে তুলে ধরতেই এই প্রস্তাব পেশ করা হয়। এই প্রস্তাব নিয়ে হওয়া ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি ভারত। শুধু ভারত নয় ভোটদানে বিরত থাকে ইন্দোনেশিয়া, মালায়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও কাজাখস্তান মতো রাষ্ট্র গুলিও। বিপক্ষে ভোট দেয় পাকিস্তান ও চিন। তবে বিরোধিতা থাকলেও ৪৭ সদস্যের মানবাধিকার পরিষদে ২৫টি ভোটে প্রস্তাবটি পাশ হয়ে যায়।
বেশ কয়েকদিন ধরেই মানবাধিকার পরিষদের প্রধান ভলকার টার্কের কাছে ইরানের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি উঠছে। ভলকার টার্ক এদিন বলেন, ‘ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কোর এবং বাসিজ ফোর্স প্রতিবাদীদের উপর গুলি চালিয়েছে। কাঁদানে গ্যাস, ব্যাটন চার্জ করা হয়েছে।’ অবশ্য ইরানের প্রতিনিধি খাদিজেহ করিমির দাবি করেন, আইলশৃঙ্খলা বজায় রাখতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।
কিন্তু এই ভোটাভুটিতে ভারত অংশ না নেওয়ায় অবাক হয়েছেন অনেকেই।ইরানের (Iran) সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক বেশ ভালো। কাশ্মীর ইস্যুতে মুসলিম বিশ্বে বহুবার নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়িয়েছে তেহরান। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ধারা ৩৭০ অবলুপ্তি এবং জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করার পর কিছুটা সরব হলেও তা রাজনীতি স্বার্থে লোক দেখানো পদক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়া, চিনকে টেক্কা দিতে ইরানের ছাবাহার বন্দরে লগ্নি করেছে ভারত। তাই এই মুহুর্তে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোন আঘাত আসুক তা দিল্লি একেবারেই চাইছে না। এমনই মত ওয়াকিবহাল মহলের।