বাংলাহান্ট ডেস্ক : দু দফায় পরপর ভারতের (India) উপরে শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি করায় ভারতের উপরে চটেছেন ট্রাম্প। ফলত ভারতের (India) থেকে আমদানি করা পণ্যের পর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে ভারতীয় অর্থনীতিকে কোণঠাসা করার ফন্দি এঁটেছেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপকে অত্যন্ত ‘অযৌক্তিক’ বলে তীব্র প্রতিবাদ করেছে বিদেশ মন্ত্রক। তবে সেইসঙ্গে এও স্পষ্ট করে দিয়েছে আমেরিকাকে, এভাবে ভারতকে (India) মোটেই দমানো যাবে না। মাথানত করবে না ভারত।
ভারতের (India) সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের
ভারত-রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন নয়। অনেক সময়ে অসময়ে দুই দেশ পরস্পরের পাশে থেকেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই ১৯৬০ সালে চিন-রাশিয়া দূরত্ব বাড়ায় ভারতের (India) সম্পর্ক গভীর হয় পুতিনের দেশের। সে সময়ে ভারতকে ১০-২০ শতাংশ ছাড়ে তেল বিক্রি করত রাশিয়া (Russia), যা অন্যান্য দেশের তুলনায় কম দামে ছিল। এছাড়াও ভারত (India) যাতে রাশিয়ার অস্ত্র কিনতে পারে, তার জন্য কোটি কোটি টাকার ঋণের বন্দোবস্ত, সাইবেরিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার অনুমোদনও দিয়েছিল রাশিয়া।
পরস্পরের পাশে থেকেছে দুই দেশ: ১৯৭৪-এ ভারত (India) প্রথম বার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করায় নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল আমেরিকা। সেসময়ও ভারতের পাশে ছিল রাশিয়া। পালটা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে ভারত (India)। রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ভোটে অংশগ্রহণ থেকেও বিরত থেকেছিল ভারত। এমনকি এরপর রাশিয়ার উপরে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পরেও মস্কোর থেকে কম দামে তেল কিনেছে নয়াদিল্লি। সেই তেল থেকে পেট্রোলজাত পণ্য তৈরি করে সেগুলি আবার রপ্তানি করে লাভবান হয়েছে ভারত (India)।
আরও পড়ুন : বিয়ের বাজারে বড় স্বস্তি, সপ্তাহান্তে পতন সোনার দামে! আজ ১ গ্রাম হলুদ ধাতু কিনতে কত খরচ পড়বে?
কী কী আমদানি করে ভারত: পরিসংখ্যান বলছে, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মস্কোর সঙ্গে তিন বছরে প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে নয়াদিল্লির। শুধু তো তেল নয়, রাশিয়ার থেকে অস্ত্রও আমদানি করে ভারত (India)। এমনকি ভারতীয় অস্ত্রভাণ্ডারে প্রায় অর্ধেক রয়েছে রুশ অস্ত্র। সে দেশ থেকে কেনা রণতরী ভারতীয় নৌবাহিনীতে নিয়োগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : হারিয়েই যেতে বসেছে এই পদ, ঠাকুরবাড়ির স্টাইলে রাঁধুন মাংসের বিরিঞ্চি, রইল রেসিপি
ভারত-রাশিয়ার এই সুসম্পর্ক কোনোদিনই ভালো ভাবে নেননি ট্রাম্প। কিন্তু তাই বলে কি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনটা করা একেবারেই যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করলে তার ব্যাপক প্রভাব ভারতীয় অর্থনীতিতে পড়বে। এছাড়াও বহু ভারতীয়ই আমেরিকার তুলনায় রাশিয়াকেই ভারতের বেশি ‘বন্ধু’ বলে মনে করে। পাশাপাশি রাশিয়ার থেকে কেনা অস্ত্রের বিকল্পের খোঁজ করতেও অন্তত কয়েক দশক লেগে যাবে। তাই ট্রাম্প যতই চোখ রাঙান না কেন, রাশিয়ার সঙ্গে মোটেই বিশ্বাসঘাতকতা করতে রাজি নয় ভারত।