নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) নেতৃত্বে থাকা ভারত(India) সরকার আমেরিকা থেকে আমদানি হওয়া ২৮ টি পণ্যের উপর সীমাশুল্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। এর জন্য আমেরিকা এতটা হচকচিয়ে গেছে যে তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনের দ্বারস্থ হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে US প্রশাসন ভারতের ২৮ আমেরিকি পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির ব্যাপারে WTO থেকে মধ্যস্থতার জন্য আবেদন করা হয়েছে। ভারত আমেরিকার স্টিল ও আলুমিনিয়াম আমদানির উপর একতরফা শুল্ক এর বিরোধী ইউএএস পণ্য এর সীমা শুল্ক বৃদ্ধি। যদিও আমেরিকার দাবি যে ভারতীয় শুল্ক WTO এর স্ট্যান্ডার্ড এর বিরুদ্ধে যায়।
আমেরিকা সরকার দ্বারা জারি প্রেস রিলিজ অনুযায়ী, আমেরিকা এটা দাবি করেছে যে ভারত দ্বারা জুন ২০১৮ ও জুন ২০১৯ এর মধ্যে লাগু অতিরিক্ত ডিউটি WTO এর জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন ট্রেড এন্ড টেরিফস স্ট্যান্ডার্ড এর সাথে মিল খায় না এবং ভারত ডবলিউটীও এর অন্য সদস্যদের তুলনায় US এর উৎপাদকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতী করছে। আমেরিকা এটি দাবি করেছে যে ইউএএস ট্রেড এক্সপেনসন এক্ট ১৯৬২ এর ধারা ২৩২ এর অন্তর্গত তার শুল্ক সংরক্ষিত আছে, যার জন্য রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার নামে যেকোনো প্রকারের ব্যাবসা সম্পর্কিত প্রতিবন্ধ লাগানোর পুরো স্বাধীনতা আছে। সেখানে ভারত দাবি করেছে যে তার শুল্ক ডবলিউটীও এর সেফগার্ড এগ্রিমেন্টের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী লাগু করা হয়েছে।
এই নির্ণয় অনুযায়ী পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমেরিকান প্রশাসনের এই নির্ণয় মোদী প্রশাসনের স্পষ্টভাষী কূটনীতির বিরুদ্ধে অস্থিরতায় নেওয়া পদক্ষেপ। মোদী সরকারের অন্তর্গত ভারত পরিষ্কার করে দিয়েছে যে ভারত সরকার ট্রাম্প সরকারের ট্রেড বুললিং নীতির সামনে মাথানত করবে না। যখনি ট্রাম্প চাপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে, ভারত বিরোধী রূপে নিজের শুল্ক লাগু করেছে। আর ট্রাম্পের ক্রমাগত হুমকি দেওয়া সত্ত্বেও মোদি সরকার নিজের নির্ণয় অটল থাকে।
ট্রাম্প ভারতকে অনেক ভাবে উস্কানোর চেষ্টা করেছে, যেমন কিছুদিন আগেই হওয়া জী২০ সেমিট এ পিএম মোদি এবং ট্রাম্পের মধ্যে হওয়া দ্বিপার্শ্বিক বার্তার ঠিক আগে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ভারতকে শুল্ক এর ব্যাপারে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এর তোয়াক্কা না করে মোদী সরকার নিজের নির্ণয়ের উপর অটল থাকে এবং বার্তার পরে ট্রাম্প নিজেই ব্যবহারে অনেক আবেগপ্রবণতা এনেছে।
মোদি সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে যা মনোভাব দেখিয়েছে তার কারণে ইউএএস সরকার নিজেকে খুব অসহায় অনুভব করছে, যে তার ডবলিউটীও এর স্মরণ নিলে পরিস্কার বোঝা যায়। কারণ ট্রাম্প আগের বছরই ডবলিউটীও এর সদস্যতা ছাড়ার হুমকি দিয়েছিলেন। ভারতের জন্য ডবলিউটীও তে নিজের পক্ষ রাখতে কোনো অসুবিধা হবে না, কারণ উনি শুধু ইউএস প্রশাসনের শুল্কের বিরোধ স্বরূপ এই নির্ণয় নিয়েছে। কিন্তু এখানে ট্রামম্পেরর জন্য নিজেই পক্ষতে অটোল থাকা খুব মুশকিল হবে, কারণ উনি ইরান, রুশ, ও চীনের মতো অনেক দেশে শুল্কে বৃদ্ধি আর বিধিনিষেধ এর হুমকি দিয়েছে।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো এটা ভুলে গেছে যে মোদি সরকারের অন্তর্গত ভারত নিজের রাষ্ট্রিয় হীত কে সবার উপরে রাখবে এবং কোনো মতেই বিদেশি শক্তির আগে মাথানত করবে না। পিএম মোদির থেকে জী২০ সেমিটে দেখা করার আগে ডোনাল্ডো ট্রাম্প নিজের টুইটে লেখে যে ” আমি প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে কথাবার্তা বলার জন্য খুব উৎসাহিত। অনেক বছর পর্যন্ত ইউএস এর বিরুদ্ধে উচ্চ শুল্ক লাগু করার পর ভারত আবার একটি শুল্ক বাড়িয়েছে। এই একদম আমি স্বীকার করতে পারব না। আর শুল্কের অবিলম্ব সরিয়ে দেওয়া উচিত।
কিন্তু PM মোদীর সাথে দেখা করার পর ট্রাম্পের অঙ্গভঙ্গি পুরোপুরী বদলে গেল। উনি বললেন ” আমারা কোনোদিন এতো নিকট সম্পর্ক স্থাপন করতে পারিনি। আজ আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি যে আমরা ব্যবসার ব্যাপারেও কথা বলবো।
PM নরেন্দ্র মোদী ট্রাম্পকে পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছে যে ব্যবসার ক্ষেত্রে ভারত কোনো পরিস্থিতিতে মাথানত করবে না এবং কোনো শুল্কের বৃদ্ধির জবাব সেই ভাষায় দেওয়া হবে। এবার নিজেকে ঘিরে যেতে দেখে এবং নিজের লোকেদের প্রলোভন দেওয়ার জন্য ডোনাল্ডো ট্রাম্প পিএম মোদির বিরুদ্ধে ডবলিওটীও এর থেকে সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করেছে। যদিও এই নির্ণয়ের ফলে আমেরিকা কোনো সফলতা পাবে না বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।