বিদ্রোহে কাঁপছে নেপাল, প্রতিবেশীর অশান্তিতে উদ্বিগ্ন ভারত, নেপালে ভারতীয়দের সতর্ক থাকার নির্দেশ নয়া দিল্লির

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক:-  ছাত্র-যুবদের বিদ্রোহে উত্তাল নেপালের (Nepal) পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলল ভারত (India)। মঙ্গলবার সকালে নয়াদিল্লির (New Delhi) বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতি জারি করে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। শুধু তাই নয় বিবৃতিতে নেপালকে ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রতিবেশী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়েই সমস্যার সমাধান হবে বলে ভারত আশাবাদী। একই সঙ্গে নেপালে বসবাসরত ভারতীয়দের সাবধানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের বিবৃতি (Nepal)

ভারতের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা গতকাল থেকে নেপালের পরিস্থিতির উপর নিবিড় নজর রাখছি। বহু তরতাজা প্রাণের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। মৃতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’’ নেপালে থাকা ভারতীয়দের উদ্দেশে আরও বলা হয়েছে, ‘‘কর্তৃপক্ষ কাঠমান্ডু এবং আরও কয়েকটি শহরে কার্ফু জারি করেছেন। ভারতীয় নাগরিকদের সাবধানে থাকার পাশাপাশি নেপাল প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন:- উত্তপ্ত নেপাল, ১৯ জন তরুণের প্রাণের বিনিময়ে শেষমেশ সমাজমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ওলি সরকারের

উল্লেখ্য, সম্প্রতি নেপাল (Nepal) সরকার ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্স-সহ ২৬টি জনপ্রিয় সমাজমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সোমবার সকাল থেকে ছাত্র-যুবরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেন। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলন ক্রমশ পুলিশ-প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রথমে শূন্যে গুলি ছোড়ে এবং রবারের গুলিও ব্যবহার করে। তবে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশ কেবল শূন্যে নয়, তাঁদের লক্ষ্য করেই গুলি চালিয়েছে। ফলে কেউ আহত হয়েছেন গুলিতে, কারও মাথা বা হাতে লেগেছে, আবার কেউ গুরুতর জখম হয়েছেন। সোমবার রাত পর্যন্ত সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯।

হুড়োহুড়ি, ধস্তাধস্তি এবং পুলিশের গুলি-লাঠির ফলে আহতের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে কয়েকশো। ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, অন্তত ২৫০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নেপাল (Nepal) সরকারের পক্ষ থেকে কার্ফু জারি করা হলেও আন্দোলন দমন করা সম্ভব হয়নি।

India instructed Indians in Nepal to be vigilant.

আরও পড়ুন:-নেপালের অশান্তির আঁচ এসে পড়ল বাংলায়, গুলিবিদ্ধ শিলিগুড়ির ট্রাকচালক!

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু সমাজমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তই নয়, সোমবারের বিক্ষোভের পেছনে জমে থাকা দীর্ঘ দিনের ক্ষোভও বড় কারণ। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল বহুদিন ধরেই। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অর্থনৈতিক বৈষম্যের সমস্যা, যা বিশেষত ছাত্র-যুব সমাজের ক্ষোভকে তীব্র করেছে। অবশেষে সেই ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়েছে রাস্তায়, যা সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে নেপালের (Nepal) প্রশাসন।

এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী ভারতের চিন্তা বেড়েছে স্বাভাবিকভাবেই। নেপালের (Nepal) অশান্তি সীমান্তবর্তী অঞ্চলে প্রভাব ফেলতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই নেপালে থাকা ভারতীয়দের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করে দিল নয়াদিল্লি।