ভারতের হাতে আসছে হাইপারসনিক মিসাইল, ছুটবে শব্দের থেকে ৫ গুন বেশী স্পিডে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ভারত (India) গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্রের সৌজন্যে ক্রমশ শক্তিও বৃদ্ধি করেছে আমাদের দেশ। মূলত, পাকিস্তান এবং চিন সীমান্তে চলমান উত্তেজনার জেরেই সামরিক দিক থেকে শক্তি সঞ্চয় করছে ভারত। এদিকে, ওই দুই দেশও বাড়িয়ে চলেছে তাদের অস্ত্রের ভান্ডার। এমতাবস্থায়, পিছিয়ে নেই ভারতও। বরং, এবার অত্যাধুনিক মিসাইল উৎপাদনের লক্ষ্য নিচ্ছে ভারত।

ব্রহ্মোস অ্যারোস্পেস বানাবে অত্যাধুনিক হাইপারসনিক মিসাইল:
জানা গিয়েছে যে, ভারত ও রাশিয়ার যৌথ প্রতিরক্ষা উদ্যোগ ব্রহ্মোস অ্যারোস্পেস জানিয়েছে, তারা এবার হাইপারসনিক মিসাইল তৈরি করতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, তারা পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যেই প্রথম হাইপারসনিক ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে সমর্থ হবে বলেও জানা গিয়েছে। ব্রহ্মোস অ্যারোস্পেসের সিইও এবং এমডি অতুল রানে গত ১৩ জুন নিজে এই তথ্য সামনে এনেছেন।

এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “আমরা আখন হাইপারসনিক মিসাইল তৈরি করতে সক্ষম। আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যেই আমরা প্রথম হাইপারসনিক ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করব।” পাশাপাশি ভারতের মাটিতেই এই উৎপাদন সম্ভব হবে বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ আর মাত্র কয়েক বছরের অপেক্ষার পরে ভারতের হাতে নিজস্ব হাইপারসনিক মিসাইল মজুত থাকবে। যা নিঃসন্দেহে এক বিরাট প্রাপ্তি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১২ জুন ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম সুপারসনিক ফ্লাইটের ২১ বছর পূর্ণ হয়েছে। পাশাপাশি আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি এই মিসাইলের রজত জয়ন্তীবর্ষ উপলক্ষ্যে একটি বিরাট অনুষ্ঠান সম্পন্ন হতে চলেছে। এদিকে, ব্রহ্মোসের প্রসঙ্গে রানে জানিয়েছেন, “আমরা সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পরিকল্পনায় অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছি। এটা তৈরির পর ভারত এক অন্য জায়গায় পৌঁছে যাবে।”

প্রতি বছর ৮০ থেকে ১০০ টি উৎপাদন হবে:
মূলত ভারতের মাটিতেই ব্রহ্মোসের সিস্টেমগুলি তৈরি হবে। এইজন্য ইতিমধ্যেই ব্রহ্মোস অ্যারোস্পেস উত্তর প্রদেশে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং সেন্টার স্থাপনের জন্য ৮০ হেক্টর জমি নির্বাচন করেছে। যেটিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। মনে করা হচ্ছে যে, ওই সেন্টারে ৮০ থেকে ১০০ টি ব্রহ্মোসের সিস্টেম প্রতিবছর তৈরি করা যাবে। ২০২৪-এর মধ্যেই এই মানুফ্যাকচারিং সেন্টারে কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।

হাইপারসনিক মিসাইলের গুরুত্ব:
মূলত, মিসাইলের জগতে হাইপারসনিক মিসাইল হল একটি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র। এটি কোনো সামান্য হাতিয়ার নয়। বরং শব্দের চেয়েও তীব্র গতিতে এটি আঘাত হানতে সক্ষম। জানা গিয়েছে, হাইপারসনিক মিসাইল শব্দের গতিবেগের থেকেও পাঁচ গুণ দ্রুতবেগে শত্রুর দিকে আঘাত হানতে সক্ষম। উল্লেখ্য যে, শব্দের গতিবেগ হল বাতাসে ৩৩২ মিটার/ সেকেন্ড।

পাশাপাশি, এই মিসাইল ইতিমধ্যেই চিন, রাশিয়া এবং আমেরিকার মত দেশগুলিতে উন্নতপর্যায়ে রয়েছে। অপরদিকে, ভারত, জার্মানি, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ফ্রান্সের মতো দেশগুলি এখনো এই মিসাইলের উপর কাজ করে চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই, ভারতের হাতে এই মিসাইল এলে সামরিক ক্ষেত্রে অনেকটাই শক্তি বৃদ্ধি হবে এবং কিছুটা হলেও ভয় ধরাবে শত্রুপক্ষকে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর