বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারত (India) সীমান্তে একটি নতুন বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছে চিন। এই বাঁধটি তিব্বতের ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই চিনের কাউন্সিল তাদের ওয়েবসাইটে এই বাঁধ সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপিত করেছে। এই বাঁধের কাজ সম্পন্ন হলে, এটি বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এদিকে, চিনের এই পদক্ষেপ ভারতের কপালে উদ্বেগের রেখা আরও গভীর করেছে। এর পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। আসলে, এটি কোনও বাঁধ নয়, বরং চিনের একটি “ওয়াটার বোম” হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যা তারা ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে। এছাড়াও, কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে এই বাঁধের অবস্থান ভারতের (India) জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, এই স্থানে টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে ভূমিকম্পের আশঙ্কাও রয়েছে।
চিনের কর্মকাণ্ডে চিন্তা বাড়ছে ভারতের (India):
ভারত সীমান্তের কাছে তৈরি হচ্ছে এই বাঁধ: মূলত, চিন ভারত (India) সীমান্তের কাছে এই বাঁধটি নির্মাণ করছে। ইতিমধ্যেই চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিং এই বাঁধ নির্মাণের ঘোষণা করেছেন। শিনের নিয়িংচি শহরে ব্রহ্মপুত্র নদের নিম্নভূমিতে এই বাঁধটি নির্মিত হবে। সেখানে হিমালয় পর্বতমালার একটি বিশাল উপত্যকা রয়েছে। এদিকে, ওই স্থানেই ব্রহ্মপুত্র নদ একটি বিশাল “ইউ-টার্ন” নিয়ে অরুণাচল প্রদেশ এবং তারপর বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ব্রহ্মপুত্র নদ চিনে “সাংপো” নামে পরিচিত। এই নদ দক্ষিণ-পশ্চিম তিব্বতের কৈলাস পর্বতের কাছে জিমা ইয়াংজং হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের দৈর্ঘ্য ১,৭০০ কিলোমিটার। এটি ভারতের অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নদীতে, তারপর আসামে ব্রহ্মপুত্র হয়ে পরে পরে বাংলাদেশে পৌঁছেছে।

ভারত কেন চিন্তিত: ভারতের (India) উদ্বেগের কারণ হল, এই বাঁধের আকার এবং আয়তন কেবল চিনকে জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের অধিকারই দেবে না, বরং এটি যুদ্ধের সময় সীমান্তবর্তী এলাকায় বন্যা নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ওই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে জল ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও বেজিংকে সক্ষম করবে। এই রিপোর্ট ২০২০ সালে একটি অস্ট্রেলিয়ান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রকাশ করেছিল। তাঁদের মতে, তিব্বত মালভূমির নদীগুলি নিয়ন্ত্রণ করে চিন ভারতকে সমস্যায় ফেলতে পারে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নারাজ! ধাওয়ান-রায়নাদের দাবি মেনে ম্যাচ বাতিল করে ক্ষমা চাইল WCL
কত হবে খরচ: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এই বাঁধটি ১৬৭.৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। যেখানে ৫ টি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হবে। সেখানে নির্মিত জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি প্রতি বছর ৩০০ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টারও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এর ফলে চিনের প্রায় ৩০ কোটি মানুষ উপকৃত হবে।
আরও পড়ুন: চতুর্থ টেস্টে ঘটতে চলেছে ঐতিহাসিক ঘটনা! ম্যানচেস্টারে ডেবিউ করবেন টিম ইন্ডিয়ার ১০ জন খেলোয়াড়
ভারতের প্রস্তুতি: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভারত অরুণাচল প্রদেশে ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপরেই একটি বাঁধ নির্মাণ করছে। ভারত ও চিন ২০০৬ সালে আন্তঃসীমান্ত নদী সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ স্তরের ব্যবস্থা (ELM) গঠন করেছিল।ওই প্রকল্পের আওতায়, চিন বন্যার মরশুমে ভারতকে ব্রহ্মপুত্র এবং শতদ্রু নদীর জলবিদ্যা সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করে। তবে, বাঁধ নির্মাণের পর এই ব্যবস্থা কতটা ভালোভাবে কাজ করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।