মোক্ষম জবাব! আমেরিকার তেল থেকে মুখ ফেরাচ্ছে ভারত, এবার কী করবেন ট্রাম্প?

Published on:

Published on:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারত (India) আবারও আমেরিকার কাছে তার শক্তি প্রদর্শন করেছে। ইতিমধ্যেই ভারত এমন একটি কাজ করেছে যা মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিন্তা বাড়িয়ে দেবে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ভারতের বৃহত্তম তেল কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (IOC) অপরিশোধিত তেল কেনার পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে। বিজনেস ইনসাইডার আফ্রিকার মতে, এখন IOC আমেরিকা থেকে তেল কেনার পরিবর্তে পশ্চিম আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল কিনবে। IOC পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ২০ লক্ষ ব্যারেল তেল এবং মধ্যপ্রাচ্যের দাস ক্রুড থেকে ১০ লক্ষ ব্যারেল তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার মাধ্যমে ভারত বিভিন্ন দেশ থেকে তেল কিনে তার জ্বালানি চাহিদা পূরণ করবে। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে ভারত কোনও একটি নির্দিষ্ট দেশের ওপর নির্ভরশীল হবে না। এদিকে, আমেরিকা অপরিশোধিত তেলের একটি বড় ব্যবসায়ী। এমতাবস্থায়, ভারতের এই পদক্ষেপ তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হবে।

আমেরিকাকে জবাব দিচ্ছে ভারত (India):

IOC নাইজেরিয়া থেকে আগবামি এবং উসান তেল গ্রেডের প্রত্যেকটি থেকে ১০ লক্ষ ব্যারেল “টোটালএনার্জি”-র মাধ্যমে কিনেছে। এছাড়াও, আবুধাবি থেকে ১ মিলিয়ন ব্যারেল দাস ক্রুড কেনা হয়েছে। পূর্বে IOC আমেরিকা থেকে ৫০ লক্ষ ব্যারেল ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) ক্রুড কিনত। এখন আমেরিকা থেকে কম তেল কেনার সিদ্ধান্ত ভারতের (India) তেল কেনার কৌশলে একটি বড় পরিবর্তন।

এই দেশগুলি লাভবান হবে: ইউক্রেনে আক্রমণের পর, ভারত (India) রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কিনছিল। এর ফলে ভারত বিশ্বে তেলের দামের ওঠানামা এড়াতে সাহায্য করেছিল। পশ্চিমী দেশগুলির নিষেধাজ্ঞাও ভারতের ওপর কোনও প্রভাব ফেলেনি। তবে, রুশ তেল কেনার কারণে, আমেরিকা ভারতের ওপর অযৌক্তিক শুল্ক আরোপ করে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

India is turning its back on American oil.

এমতাবস্থায়, নাইজেরিয়ার মতো দেশগুলি IOC-র তেল কেনার নতুন সিদ্ধান্তের ফলে উপকৃত হবে। নাইজেরিয়া এবং অ্যাঙ্গোলার মতো দেশগুলি আশা করছে যে, এর ফলে তাদের তেল থেকে আয় স্থিতিশীল থাকবে। কারণ তেল বিক্রির জন্য বিশ্বে প্রচুর প্রতিযোগিতা রয়েছে। আফ্রিকান তেল উৎপাদনকারী দেশগুলি এই পরিবর্তন পছন্দ করছে। যেটি তেলের বাজারে তাদের স্থান তৈরি করতে সাহায্য করবে।

আরও পড়ুন: টিম ইন্ডিয়ার এই খেলোয়াড়ের হানিমুনে গিয়েছিলেন রিঙ্কু সিং! কী জানালেন তারকা প্লেয়ার?

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, নাইজেরিয়া থেকে কেনা তেল হল ফ্রি-অন-বোর্ড (FOB)। এর অর্থ হল জাহাজে তেল লোড করার খরচ নাইজেরিয়া বহন করবে। দাস ক্রুড “ডেলিভার্ড” হিসেবে কেনা হয়। আগামী অক্টোবরের শেষের দিকে এবং নভেম্বরের শুরুতে তেলবাহী জাহাজ ভারতীয় বন্দরে পৌঁছবে। এর থেকে বোঝা যায় যে ভারত বিভিন্ন দেশ থেকে তেল কেনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: শুধু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান নয়! আরও এক কারণেও হচ্ছে “বিদ্রোহ”, দেশে অশান্তির প্রসঙ্গে বাংলাহান্টকে কী জানালেন নেপালের প্রাক্তন সাংসদ?

এই পরিবর্তন কী দেখাচ্ছে: এই পরিবর্তন এটাই দেখায় যে ভারত (India) বিশ্বে সংঘটিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঘটনাবলীর ওপর নির্ভর করে নিজেদের কৌশল পরিবর্তন করছে। ভারতও লক্ষ্য রাখছে যে নিষেধাজ্ঞাগুলি যাতে তার ওপর কোনও প্রভাব না ফেলে এবং বাজারের চাহিদাও পূরণ হয়। এই পদক্ষেপ ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করবে এবং পশ্চিম আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কও উন্নত করবে। এর ফলে এই ক্ষেত্রগুলিতে ভারতের প্রভাবও বৃদ্ধি পেতে পারে। সামগ্রিকভাবে সামগ্রিকভাবে ভারতের এই কৌশল এটাই প্রমাণ করে যে, ভারত বিশ্বে তার জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কতটা ভালোভাবে কাজ করছে। ভারতের কৌশল পরিবর্তিত হয়েছে। কারণ ভারত তার জ্বালানি চাহিদা পূরণ করতে চায় এবং বিভিন্ন দেশ থেকে তেল কিনতে চায়। এর ফলে ভারত আর কোনও একটি দেশের ওপর নির্ভরশীল থাকবে না। এর মাধ্যমে বিশ্বে তেলের দামের পরিবর্তনের ফলেও ভারতের ওপর কম প্রভাব পড়বে।