বাংলা হান্ট ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় T20 আন্তর্জাতিক ম্যাচে টিম ইন্ডিয়া (India National Cricket Team) ৫১ রানে পরাজিত হয়েছে। ২১৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওই ম্যাচে ভারতীয় দল মাত্র ১৬২ রানে অলআউট হয়ে যায়। এদিকে, এই পরাজয়ের নেপথ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে উঠে আসছে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ক্রমাগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা। যার মূলে রয়েছেন টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচ গৌতম গম্ভীর। যিনি ব্যাটিং পজিশনকে ‘ওভাররেটেড’ হিসেবে বিবেচিত করেন। জানিয়ে রাখি যে, গম্ভীর সম্প্রতি সাদা বলের ক্রিকেট সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি দেন। যেখানে তিনি সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাটিং অর্ডারকে ‘ওভাররেটেড’ বলেন। গৌতম গম্ভীর একাধিকবার জোর দিয়ে বলেছেন যে, ওপেনার ছাড়া প্রত্যেক ব্যাটারের যেকোনও জায়গায় খেলার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় T20 ম্যাচেও একই রকমের প্যাটার্ন দেখা গেছে। যা শেষ পর্যন্ত টিম ইন্ডিয়াকে পরাজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
গম্ভীরের জন্যই কী টিম ইন্ডিয়ার (India National Cricket Team) দুর্দশা?
গৌতম গম্ভীরের চিন্তাভাবনার সরাসরি প্রভাব গত বৃহস্পতিবারের ম্যাচে স্পষ্ট ছিল। যেটি সম্পূর্ণ নেতিবাচক প্রমাণিত হয়। ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হওয়া শুভমান গিলকেই ইনিংসে ওপেন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। যেখানে প্রথম বলেই তিনি আউট হন। দলের তখন একজন ইন-ফর্ম ব্যাটারের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু, ৩ নম্বরে পাঠানো হয় অক্ষর প্যাটেলকে। সাধারণত লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করতে নামা অক্ষর চাপের মুখে ২১ বলে মাত্র ২১ রান করেন। যার ফলে দল।রান তাড়া করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে পিছিয়ে পড়ে।

এদিকে, নিয়মিত ৩ নম্বরে ব্যাট করা সূর্যকুমার যাদব ওই ম্যাচে ৪ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন। যেখানে তিনি মাত্র ৫ রান করেন। এদিকে, এর আগের ম্যাচে ৩ নম্বরে ব্যাট করা তিলক ভার্মাকে একেবারে ৫ নম্বরে নামিয়ে আনা হয়। তিনি ৬২ রানের লড়াকু ইনিংস খেললেও, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। তিলক যদি ব্যাট হাতে আগে নামতেন সেক্ষেত্রে হয়তো চাপ এত তীব্র হতো না। এদিকে, বিস্ফোরক ব্যাটার শিবম দুবে নামার সুযোগে পান আট নম্বরে। যেখানে তিনি মাত্র ১ রান করে আউট করা হয়।
আরও পড়ুন: মেসিকে গ্র্যান্ড ওয়েলকাম জানাতে প্রস্তুত কলকাতা! আসছেন শাহরুখও, অনুরাগীদের দিলেন বিশেষ বার্তা
ব্যাটিং অর্ডার সম্পূর্ণরূপে অগোছালো ছিল: জানিয়ে রাখি যে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় T20-তে ব্যাটিং অর্ডারে প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতা এবং আত্মবিশ্বাসের সম্পূর্ণ অভাব ছিল। প্রায় প্রত্যেক ব্যাটার নতুন পজিশনে নেমেছিলেন। যার ফলে কেউই তাঁদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারছিলেন না। পাওয়ারপ্লেতে দ্রুত উইকেট পড়ার পরও, কোনও সেট ব্যাটারকে ওপরে পাঠানো হয়নি। যার ফলে রান রেট দ্রুত বাড়তে শুরু করে এবং উইকেটেরও পতন ঘটে। এদিকে, ব্যাটারদের নিয়ে এই পরীক্ষা কেবল একটি ম্যাচেই সীমাবদ্ধ নেই। গিল গত কয়েকটি ম্যাচ ধরে ওপেনিং করছেন। তিলক ৩-৪-৫, হার্দিক ৫-৬-৭ এবং দুবে ৭-৮-এ রোটেট হচ্ছেন। এমতাবস্থায়, বড় লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে দল বারবার হতাশ হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বন্ধ হয়েছে ৩.০২ কোটি ভুয়ো ID! টিকিট বুকিং সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে বড় পদক্ষেপ ভারতীয় রেলের
T20 বিশ্বকাপের আগে চিন্তা বাড়ছে: উল্লেখ্য যে, ২০২৬-এই হতে চলেছে T20 বিশ্বকাপ। এমতাবস্থায়, যদি প্রত্যেক খেলোয়াড়কে তাঁদের অবস্থান এবং ভূমিকা এখনই স্পষ্ট না করা হয়, তাহলে এই অনিশ্চয়তা দলের জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক হতে পারে। গম্ভীরের ফ্লেক্সিবিলিটির ধারণা তত্ত্বগতভাবে ভালো শোনালেও এটি ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছে। তাই এখনই নির্দিষ্ট ভূমিকাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজন। অন্যথায় প্রতিটি পরাজয়ের পরে একই প্রশ্ন উঠতে থাকবে। এমতাবস্থায়, আগামী ম্যাচে টিম ইন্ডিয়া ঠিক কোন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।












