বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একটা সময় ছিল যখন ভারতে (India) মোবাইল (Mobile Phones) কোম্পানির নামে সবাই শুধু স্যামসং (Samsung) আর নোকিয়ার (nokia) নামই জানত। এরপর মোটোরোলা, সনির মতো কিছু কোম্পানি ভারতে কাজ শুরু করে। অ্যাপেলের iPhone সবার কাছে বিলাসিতার মতো ছিল। আর সেই বিলাসিতার স্বাদ কিছুটা হলেও পূরণ করত স্যামসং-র গ্যালাক্সি সিরিজের ফোনগুলো।
এরপর রেডমি, রিয়েলমি, অপ্পো, ভিভোর মতো ফোনের চলন শুরু হল। এই কোম্পানিগুলো এমন বাজার করে নিল যে, ভারতের মার্কেটকে চীনা (China) মোবাইল ফোনগুলো দখলদারি বেড়ে যায়। এই ফোনগুলো যেমন সস্তা ছিল, তেমনই দেখতেও সুন্দর আর কাজেও ভালো। আর এই কারণেই এরা খুব তাড়াতাড়ি গোটা ভারতীয় বাজার নিজেদের দখলে নিয়ে নিল। কিন্তু এখন ভারত আমদানিকারক দেশ থেকে রপ্তানিকারক দেশ হয়ে উঠেছে। ভারতের ফোন ভারতে এখন বিপুল হারে বিক্রি হচ্ছে।
কেন্দ্র আমদানিকে রপ্তানিতে বদলানোর জন্য প্রতিবদ্ধ ছিল, আর সেই কারণেই ২০১৭-১৮ এর পর ভারতীয় মোবাইল শিল্প আমদানিকারক থেকে রপ্তানিকারকে বদলে যায়। রপ্তানি ২০০ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যায়। আর এই সময়ে আমদানি ৩.৫ বিলিয়ন ডলার থেকে প্রায় সাত গুণ কমে ৫০০ মিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত এক বছরে ভারতে মোবাইল ফোনের আমদানি হ্রাস পেয়েছে। একবছর আগে যেই আমদানি ৩০০০ কোটি টাকা ছিল। ২০২১-২২ এর প্রথম ত্রৈমাসিকে তা কমে ৬০০ কোটিতে নেমে আসে। ইন্ডিয়া সেলুলার অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পঙ্কজ মহিন্দ্রু বলেন, ‘২০১৪-১৫ এর পর মোবাইল আমদানিতে এটাই সবথেকে বড় পতন।” বলে রাখি, ২০২০-২১ এর প্রথম ত্রৈমাসিকে মোবাইল রপ্তানি ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ছিল। যা ২০২১-২২ এর প্রথম ত্রৈমাসিকে বেড়ে ৪ হাজার ৬০০ কোটি হয়ে যায়।
ভারত সরকার চীনের সস্তা উৎপাদনে লাগাম কষা শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই। চীনের স্মার্টফোন কোম্পানিগুলো সস্তা বিতরণ পদ্ধতি ব্যবহার করে, যেমন খরচ কমানো এবং দ্রুত ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য সম্পূর্ণ অনলাইন প্রক্রিয়া অনুসরণ করার চেষ্টা করেছে। অন্যদিকে ভারত উৎপাদের স্তরে কাজ করেছে। ভারত কোম্পানিগুলোকে সরাসরি ভারতে এসে মোবাইল নির্মাণের কথা বলেছে। আর এরজন্য PLI যোজনাও শুরু করা হয়েছে। আজ বাজারে উপলব্ধ স্যামসং এর M সিরিজের সব ফোনই নয়ডায় তৈরি হয়।
শুধু স্যামসংই না, এখন ভারতে অপ্পো, ভিভো এমনকি অ্যাপেলও নিজেদের ফোন তৈরি করছে। এরফলে একদিকে ভারত যেমন স্মার্টফোনগুলোর জন্য চীন বা অন্য দেশের উপর নির্ভর হওয়া থেকে বাঁচছে। তেমনই ভারতে প্রচুর কর্মসংস্থানও হচ্ছে। আর সবথেকে বড় বিষয় হল, ভারত এখন ফোন আমদানির বদলে রপ্তানি করে চীনকেও টেক্কা দিচ্ছে।